ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১

নিজের তৈরি বিমানে উড়লেন জুলহাস

নিজস্ব সংবাদদাতা, শিবালয়, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ৪ মার্চ ২০২৫

নিজের তৈরি বিমানে উড়লেন জুলহাস

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে মঙ্গলবার স্থানীয়ভাবে তৈরি উড়োজাহাজ ওড়ানোর সময় জাফরগঞ্জে যমুনা পাড়ে উৎসুক জনতার ভিড় জমে

নিজের তৈরি আরসি বিমানে আকাশে উড্ডয়ন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শিবালয়ের ষাইটঘর তেওতা এলাকার তরুণ উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লা। মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেনের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে জাফরগঞ্জ এলাকায় তা আনুষ্ঠানিকভাবে আকাশে উড্ডয়ন করানো হয়। এসময় জাফরগঞ্জ যমুনার পাড়ে উৎসুক জনতার ঢল নামে।
উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লার বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায়। নদী ভাঙনের শিকার তার পরিবার বর্তমানে শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা এলাকায় বসবাস করছেন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। সে ২০১৪ সালে দৌলতপুরের জিয়নপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। অর্থাভাবে তার আর পড়ালেখা হয়নি। বর্তমানে ঢাকায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করছেন ২৮ বছরের এই তরুণ। 
জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলহাস ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের জিনিস কাটাকাটি করে কিছু একটা বানানোর চেষ্টা করত। তাকে জিজ্ঞেস করলেই সে আমাদের বলত, একদিন দেখবে কী বানিয়েছি।
জুলহাস প্রায় চার বছর ধরে বিমান বানিয়ে উড্ডয়নের চেষ্টা করে আসছিল। কিন্তু সফল হতে পারছিল না। তবে এবার সফল হয়েছে। যমুনার চরাঞ্চলে নিরাপদ ঘাঁটিতে তার বিমানটি প্রায় ৫০ ফুট ওপরে উঠতে সক্ষম হয়।
জুলহাস মোল্লা বলেন, প্রায় চার বছর আগে মাথায় আসে রিমোটকন্ট্রোল দিয়ে বিমান তৈরি করার। এর কিছু দিন পর আল্টা লাইট বিমান তৈরির চিন্তা জাগে। কিন্তু তেমন কোনো সফলতা আসেনি। পরে দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর এ বিমানটি তৈরিতে সফলতা পাই।
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে পাম্প মেশিন  আর এ্যালমুনিয়াম ও এসএস দিয়ে বিমানটি তৈরি করি। এর ওজন হয়েছে ১০০ কেজি। গতি পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ডিজিট্যাল মিটার। এর ইঞ্জিন চলবে পেট্রোল অথবা অকটেনে। যার ঘণ্টায় গতিবেগ ৭০ কিলোমিটার।  
মঙ্গলবার বিমানটি আনুষ্ঠানিকভাবে আকাশে উড়ানো হয়। এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মানেয়ার হোসেন মোল্লাসহ প্রশাসনের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। যা দেখতে নির্জন এ যমুনার পাড়ে ভিড় করেছে বিভিন্ন বয়সী নানা শ্রেণিপেশার উৎসুক মানুষ।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা জনকণ্ঠকে বলেন, জুলহাসের গবেষণার কাজে সরকার সহযোগিতা করবে। প্রাথমিকভাবে তাকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মহলে এ বিষয়ে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী প্রয়োজনীয় সহায়তা ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

×