
ছবি: সংগৃহীত
প্রথমবারের মতো পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুরক্ষায় বীমা সুবিধা চালু করলো ইউনিলিভার বাংলাদেশ। উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল) চট্টগ্রামে তাদের প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট-এর অংশ হিসেবে দেশে প্রথম বারের মতো পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য জীবন বীমা সুবিধা চালু করেছে। এই গ্রুপ বীমার মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা জীবন ও স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা পাবেন, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। বীমা সুবিধার আওতাভুক্ত প্রত্যেক কর্মী দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত জীবন বীমা সুবিধা পাবেন এবং বিশেষ চিকিৎসা পরিস্থিতিতে শতভাগ সুবিধাও পাওয়া যাবে। মেটলাইফ বাংলাদেশ এবং ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা)-এর সঙ্গে একসাথে ইউনিলিভারের এই উদ্ভাবনী উদ্যোগ চট্টগ্রামের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জীবন-জীবিকার মান উন্নত করার লক্ষ্যে জীবন বীমা সুবিধা প্রদান করছে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইউনিলিভার বাংলাদেশের কার্যালয়ে বীমা কোম্পানীর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার; মেটলাইফ বাংলাদেশের সিইও আলা আহমদ; ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন-এর সিইও মো. আরিফুর রহমান; ইউনিলিভার-এর কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস এন্ড কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর শামিমা আক্তার এবং মেটলাইফ বাংলাদেশের পরিচালক ও কর্মচারী সুবিধা বিভাগের প্রধান মো. কামরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
অনুষ্ঠানো জানানো হয়, এই বীমার আওতায়, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মসূচিতে নিযুক্ত ১,৮২৭ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী জীবন ও স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা পাবেন, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। বীমা সুবিধার আওতাভুক্ত প্রত্যেক কর্মী দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত জীবন বীমা সুবিধা পাবেন, এবং বিশেষ চিকিৎসা পরিস্থিতিতে শতভাগ সুবিধাও পাওয়া যাবে। এছাড়াও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমা সুবিধা প্রদান করা হবে। এই স্কিমের মধ্যে চিকিৎসক পরামর্শ ফি ও হাসপাতাল ফি-এর মতো জরুরি স্বাস্থ্যসেবা খরচের জন্য মেডিক্যাল রিইম্বার্সমেন্ট সুবিধাও প্রদান করা হবে।
প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো, পুনর্ব্যবহার ও সহযোগিতার মাধ্যমে প্লাস্টিক-জনিত দূষণের অবসান করার উদ্দেশ্যে ইউনিলিভার তাদের বৈশ্বিক লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ভ্যালু চেইনে পরিবর্তন আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ২০২০ সাল থেকে, কোম্পানিটি প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি উদ্ভাবনী এবং সম্প্রসারণযোগ্য সার্কুলার মডেল প্রতিষ্ঠা করেছে, যার মাধ্যমে তারা তাদের পণ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের চেয়ে বেশি প্লাস্টিক সফলভাবে সংগ্রহ করছে। এ সব প্লাস্টিক সংগ্রহ কাজে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা প্রায়ই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন এবং তাদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) সুবিধা থাকে খুবই সীমিত। এই কর্মীরা পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ সংগ্রহ ও বাছাই করলেও, তারা প্রায়ই গুরুতর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন হন, যার মধ্যে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া ও প্রাণহানির মতো ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে সরকার, বিশেষজ্ঞ এবং এনজিওগুলোর সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে ইউনিলিভার একটি সামাজিকভাবে ন্যায্য সার্কুলার অর্থনীতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।
আসিফ