
রৌহা বাঁকপাড়া খালের ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প দুই দপ্তরের দ্বন্দ্বের কারণে স্থগিত আছে
সাটুরিয়ায় রৌহা বাঁকপাড়া খালের ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প দুই দপ্তরের দ্বন্দ্বের কারণে স্থগিত হয়ে আছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের (পিআইও) অনুমোদন পাওয়া সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) আপত্তির মুখে পড়েছে। ফলে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলার নয়টি খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস অনুমোদন পায় এবং দরপত্র আহ্বান করে। এর মধ্যে দরগ্রাম ইউনিয়নের রৌহা বাঁকপাড়া সড়কের খালের ওপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। বর্তমানে সেখানে ৪০ বছরের পুরনো একটি সরু সেতু রয়েছে, যা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হায়দার আলী বলেন, বহু বছর আগে নির্মিত সেতুটি ভগ্নদশায় পৌঁছেছে। পাটাতন ও রেলিং নষ্ট হয়ে গেছে। সেতুটি সরু হওয়ায় ভ্যানগাড়িও চলাচল করতে পারে না। নতুন সেতু নির্মাণের কথা শুনেছিলাম, কিন্তু তা বন্ধ রয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান মোল্লা জানান, ডিএস, সিএস, এসএ ও আরএস পর্চা অনুযায়ী সড়কের মালিক আমরা। ১৯৯৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এর রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের দপ্তর করেছে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক রেজুলেশন অনুযায়ী আমরা সড়কের ওপর সেতু নির্মাণে বাধামুক্ত। কিন্তু এলজিইডি কর্মকর্তারা সেতু নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ইউএনও-র কাছে হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।
এদিকে, এলজিইডি কর্মকর্তা ইমরুল হোসেন দাবি করেন, রৌহা গ্রামের বাঁকপাড়া সড়কটি এলজিইডির তালিকাভুক্ত এবং কোড নম্বর রয়েছে। সুতরাং, সেতু নির্মাণের কাজ আমাদের বিভাগের। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কীভাবে এলজিইডির সড়কে সেতু নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করল, সেটাই প্রশ্ন। তাছাড়া, পিআইও যে রেজুলেশন দেখাচ্ছেন, তার মেয়াদ পাঁচ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে।’
দুই বিভাগের টানাপোড়েনে প্রকল্পের মেয়াদ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময় বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করলে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করা হয়েছে। তবে এলজিইডির আপত্তির কারণে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে ২৭ লাখ ৮০ হাজার ২৫২ টাকা বরাদ্দ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দরগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলীনুর বকস রতন বলেন, পুরনো সেতুটি কোনো কাজে আসে না। নতুন সেতুর দরকার ছিল। কিন্তু দুই দপ্তরের সমন্বয়হীনতায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়বে।
সাটুরিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, দুই দপ্তরকে বিষয়টি সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠাতে বলা হয়েছে।