ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

গফরগাঁওয়ে চেক জালিয়াতি মামলায় প্রতারক মামুনুর রশীদ গ্রেপ্তার

নিজস্বসংবাদদাতা, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ।

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ৩ মার্চ ২০২৫

গফরগাঁওয়ে চেক জালিয়াতি মামলায় প্রতারক মামুনুর রশীদ গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চেক জালিয়াতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি প্রতারক চক্রের হোতা মামুনুর রশীদ ফাত্তাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

সোমবার সকালে,গফরগাঁও থানার এ এসআই মামুন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঢাকার শান্তিবাগের বাসা থেকে পলাতক এই প্রতারককে গ্রেপ্তার করে। পরে আসামিকে গফরগাঁও থানায় আনা হয়।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানায়, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে দায়িত্বে থাকা প্রবাসীকল্যাণ  ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমানে জনতা ব্যাংকের এমডি মজিবুর রহমানের নাম  ভাঙ্গিয়ে উনার আপন শ্যালক মামুনুর রশীদ ফাত্তাহ লোকজনকে বিভিন্ন ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। চাকরির নামে ভুয়া নিয়োগ পত্র দিয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিজের মোবাইল ফোন নম্বর ও বাসস্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে চলে যেতেন। পরিবারের লোকজনকে জানালে ও তারা কেউ এই অপকর্মের দায়িত্ব নিতে চাইতনা। চাকরি প্রত্যাশী কেউ কেউ চুক্তিপত্র সম্পাদন করে টাকা দিলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা প্রতারক মামুনুর রশীদ ওরফে ফাত্তাহ বোনজামাইকে দেখে টাকা লেনদেন করতেন। 

গত ২০২১ সালে এক ভুক্তভোগী মামুনুর রশীদ ফাত্তাহর নামে চাকরি দেওয়ার নাম করে চেকের বিপরীতে টাকা নেওয়ায় ময়মনসিংহ অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করেন। লাপাত্তা আসামী ফাত্তাহকে সংশ্লিষ্ট চেক জালিয়াতি মামলায় ২০২৩ সালে আদালত ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা ও এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে।দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার তাকে গ্রেপ্তার করে। 

এ ব্যাপারে মামলার বাদী নাহিদ আলম বলেন, আমি আদালতের কাছে ন্যায় বিচার পেয়েছি।পুলিশ প্রতারককে গ্রেপ্তার করলেও ফাত্তাহকে  অনৈতিকভাবে সাহায্যকারীরা বাইরে রয়ে গেল। অপর ভুক্তভোগী মামুনুর রশীদ ফাত্তাহর আপন চাচাতো ভাই শেখ আলীম রেজা আপেল বলেন,আমার কাছ থেকে ইউসিবি ব্যাংকে চাকরী দিবে বলে সাত লাখ টাকা নেয় ফাত্তাহ। এবং ২০১৯ সালে আমাকে ইউসিবি ব্যাংকের এমডি স্বাক্ষরিত একটি এপয়েন্টমেন্ট কার্ড দিন। জয়েন করতে গেলে শুরু হয় নানা নাটকীয়তা। আর টাকা চাইতে গেলে মিথ্যা মামলা ও হুমকি দিয়ে আসছে ফাত্তাহর বড় বোন হ্যাপি সহ পরিবারের লোকজন। আমি আইনি প্রক্রিয়ার এগুতে গেলেও ফাত্তাহ ও তার পরিবার তারা ক্ষমতা খাটিয়ে পিবিআই রিপোর্টকে প্রভাবিত করেন। আমি তার শাস্তি ও আমার টাকা ফেরত চাই।

ভুক্তভোগীরা আরো জানায়,ফাত্তাহ নিজেকে এস এস সি ৯৭/৯৯ ব্যাচে অনলাইন সেলিব্রিটি হিসিবে দাবী করেন। উদ্যোক্তা ও নানা কোম্পানিতে ইনভেস্টর খুঁজে দিয়ে তার প্রতারণার হাতকে পরিপক্ক করেছেন। কুইক এক্সপ্রেস  প্রতারণা সহ নানা ইনভেস্টর খোঁজা ও  নতুন উদ্যোক্তা থেকে ছলে বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই তার কাজ ছিল। পাশাপাশি লোকজনকে পদস্থ কর্মকর্তার নাম বলে ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানে লোভনীয় বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিত।

গফরগাঁও থানার ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, আসামি চেক জালিয়াতি মামলায় ময়মনসিংহ অর্থ ঋণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক ছিলেন। পুলিশ তাকে সোমবার ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলহাজতে পাঠায়। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

 

ফয়সাল

×