ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

যান্ত্রিক সভ্যতার ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে পালতোলা নৌকা

শরিফুল রোমান, মুকসুদপুর

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ৩ মার্চ ২০২৫

যান্ত্রিক সভ্যতার ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে পালতোলা নৌকা

ছবি: পালতোলা নৌকা

আবহমান গ্রামবাংলার লোকসংস্কৃতির অন্যতম ধারক ঐতিহ্যবাহী পালতোলা নৌকা। যান্ত্রিক সভ্যতার ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে পালতোলা নৌকা।
এক সময়ে নদীগুলোতে সারি সারি পাল তোলা নৌকা চোখে পড়লেও সময়ের বিবর্তণে জৌলুস হারানো নদ-নদীর করুণ অবস্থা আর যান্ত্রিক সভ্যতা বিকাশের ফলে বিলুপ্তির পথে  পাল তোলা নৌকা।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা কুমার  নদীবেষ্টিত বেশির ভাগ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত ছিল নদী আর পালের নৌকা, ডিঙ্গি নৌকাসহ বিভিন্ন নৌকার সম্পর্ক।
বিশ থেকে পঁচিশ বছর আগেও কুমার নদের নৈসর্গ রূপের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে সারি সারি নৌকা। এসব নৌকায় ছিল রঙিন পাল। স্বচ্ছ পানির কলতান আর পালে লাগা বাতাসের শব্দ অনুভূতি জুগিয়েছে প্রাণে। পালতোলা নৌকায় নদী ভ্রমণে তৃপ্ত হতো মন। সারি সারি নৌকার ছন্দবদ্ধ চলা আর বাতাসে পাল উড়ার মনোরম দৃশ্য দেখে মনপ্রাণ আনন্দে নেচে উঠেছে।


সমাজসেবী রুদ্র কমল জানান, নদীর পাড়ে দল বেঁধে মানুষ পালতোলা নৌকার সে দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যেতো। আর মাঝনদী থেকে ভেসে আসা দরাজকণ্ঠে ভাটিয়ালি গানের সুর শুনে মনে তৃপ্ত এনে দিতো। নদীকে ঘিরে এক সময় পালতোলা নৌকা ছিল যাতায়াতের মাধ্যম। এপাড় থেকে ওপাড়ের যাত্রীদের ভাসিয়ে নিয়ে যেত নৌকা।  কালের পরিক্রমায় এসব নৌকা এখন অতীত।

এখন নদীতে যেটুকু সময় পানি থাকে বিশেষ করে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নৌকা চলাচল করে। পালতোলা নৌকার দেখা মিলে না। এক সময় সাম্পন, যাত্রীবাহী গয়না, একমালাই নৌকা, কোষা নৌকা, ছিপনাও, ডিঙিনৌকা, পেটকাটা নাও, বোঁচা নাও সহ বিভিন্ন ধরণের পালের নাওয়ের ব্যবহার ছিল।
এখন আর কদর নেই মাঝি-মাল্লাদেরও। নৌকায় পাল এবং দাঁড়-বৈঠার পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজেলচালিত ইঞ্জিন। যান্ত্রিক সভ্যতার ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে পালতোলা নৌকা।

শিলা ইসলাম

×