ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় সন্তানকে জিম্মি করে মায়ের কাছে মুক্তিপণ দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী।

প্রকাশিত: ১৯:১২, ২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৫, ২ মার্চ ২০২৫

মালয়েশিয়ায় সন্তানকে জিম্মি করে মায়ের কাছে মুক্তিপণ দাবি

মালয়েশিয়ায় সাগর নামের এক যুবককে জিম্মি করে তার মায়ের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।

ওই যুবকের মা বিউটি বেগম তার ছেলেকে ফিরে পেতে আজ রবিবার (২ মার্চ) বাউফল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।  

সাগরের বাড়ির বাউফলের চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে। তার বাবার নাম ইদ্রিস ফরাজি। প্রায় দেড় বছর আগে একই উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের বশার হাওলাদারের ছেলে প্রবাসী মো. আমিন হাওলাদার সাগরকে মালয়েশিয়া নিয়ে যান।

প্রবাসে জিম্মি  সাগরের মা বিউটি বেগম বলেন, “আমার ছোট ভাই সোহরাব প্যাদা তার শ্যালক আমিন হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া থাকেন। তিনি মালয়েশিয়ায় অনেক লোক নিয়েছেন। আমার ভাই সোহরাব আমার ছেলেকে ভালো বেতনে মালয়েশিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখায়। বিনিময় তার শ্যালককে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে ।

আমরা ধারদেনা করে টাকা জোগাড় করে তাকে দেই। আমার ভাইর শ্যালক আমিন প্রায় দেড় বছর আগে  আমার ছেলে সাগরকে মালয়েশিয়া নিয়ে যান। বিদেশ নিয়ে ভালো চাকরি না দিয়ে উল্টো আমার ছেলেকে জিম্মি করে নির্যাতন শুরু করে আমিন। 

ছেলের মুক্তির জন্য আমাদের কাছে সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় ছেলের সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগ করতে দিচ্ছেন না। 

কয়েকদিন আগে আমিন আমাকে ফোন দিয়ে অপরপ্রান্তে আমার ছেলেকে মারধর করেন। ছেলের কান্নার শব্দ আমার কলিজায় লেগেছে। আর এসব কিছুর সাথে আমার ভাই সোহরাব জড়িত। সোহরাবের বুদ্ধি পরামর্শে তার শ্যালক আমার ছেলেকে জিম্মি করে নির্যাতন করতেছেন।”  

ছেলেকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়ে বিউটি বেগম আরও বলেন, “ভালো বেতনের জন্য আমার ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছি। ভাবছিলাম ছেলের বেতনের টাকায় অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে বাকি জীবন সুখে থাকব। সব স্বপ্ন শেষ। আমার ভাই ও তার শ্যালক আমার ছেলেকে বিদেশ নিয়ে নির্যাতন করতেছে। আমাদের সাথে কথাও বলতে দিচ্ছে না। ছেলেকে  ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে সহযোগিতা ও দোষিদের বিচার দাবি করছি।”

জিম্মি সাগরের মামা মো. ইউসুফ বলেন, “দালাল আমিন প্রথম বার ২০২৩ সালে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া নেওয়ার সময় বিদেশ থাইল্যান্ডে আটক হন আমার ভাগিনা সাগর। এক মাস ১৭দিন কারাভোগ করার পর তাকে মুক্তি দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেন থাইল্যান্ড সরকার। পরে বৈধ ভিসায় তাকে মালয়েশিয়া নেন। মালয়েশিয়া নিয়ে আমার ভাগিনাকে নির্যাতন শুরু করেন আমিন। মুক্তিপণ চায়।” 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আমিন হাওলাদারের হোয়াটসঅ্যাপে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভি করেনি। 

সোহরাব প্যাদা বলেন, “আমার শ্যালকের মাধ্যমে বিদেশে পাঠিয়েছি। বিদেশ পাঠাতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা এখনো পরিশোধ করেনি। আর নির্যাতনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”

এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, “এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রিফাত

×