ছবি: সংগৃহীত
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় আবু তালেব আবু নামে এক ইউপি সদস্যের অবৈধ বালু উত্তোলনের ভিডিও করায় সাংবাদিককে লাঞ্চিত করে মোটরসাইকেল ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার রাতে ঐ ইউপি সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন হেনস্থার শিকার চ্যানেল২৪ টেলিভিশন এর লালমনিরহাট সংবাদদাতা মাহফুজুল ইসলাম বকুল। এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মহিষখোচা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ওয়াহেদুজ্জামান আবিরসহ যুবদলের বেশ কয়েকজন নেতা ইউপি সদস্যে আবুর বালু উত্তলনের খবর পেয়ে চন্ডিমারী গ্রামে যান। এখবর জানতে পেয়ে সাংবাদিক মাহফুজুল ইসলাম বকুলও তাদের সাথে চন্ডিমারী গ্রামে যান। সেখানে তিনি দেখতে পান রাতের আঁধারে তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
সাংবাদিক বকুল ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করার সময় ইউপি সদস্য আবু তালেব আবু ও তার লোকজন তাকে বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে তারা তাকে গালিগালাজ করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় এবং মারধরের চেষ্টা করে। এসময় হামলাকারীরা যুবদলের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকের মোটরসাইকেল সহ চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং ওই সাংবাদিকের ক্যামেরা, বুম সহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এসময় ইউপি সদস্যে ও তার লোকজনের হামলায় সাংবাদিক বকুলসহ যুবদল ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়।
এ ঘটনায় আহত চারজনকে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন, মহিষখোচা ইউনিয়ন যুবলের সহ-সভাপতি সুমন মিয়া (৩৫), সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুন নবী জুয়েল (৩৭), মহিষখোচা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মমিন (২৬), যুবদল সদস্য নুর আলম (৩২)। এছাড়াও যুবদল সভাপতি ওয়াহেদুজ্জামান আবির।
এ ঘটনায় শুক্রবার (২৮ ফেরুয়ারি) রাতে চ্যানেল-২৪এর সাংবাদিক মাহফুজুল ইসলাম বকুল আদিতমারী থানায় ইউপি সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ও মহিষখোচা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি অহেদুজ্জামান আবীর ইউপি সদস্য আবুর বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক মাহফুজুল ইসলাম বকুল বলেন, "মহিষখোচা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দুলাল মিয়ার প্রত্যক্ষ মদদে তিস্তা নদী থেকে প্রতিদিন রাতের আঁধারে ট্রাকে করে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন ইউপি সদস্য আবু তালেব ও তার লোকজন। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনও অভিযান চালাচ্ছে না। খবর পেয়ে ভিডিও ধারণের সময় তারা হামলা চালায় এবং আমার ক্যামেরা, মোটরসাইকেল ও ব্যাগে থাকা অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে যায়। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আবু তালেব আবু বলেন, আমি কাউকে হামলা করিনি। লেবারদের সাথে কি হয়েছে সেটা আমি জানিনা।
মহিষখোচা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মজিত হোচত বলেন, আমাদের দলের সভাপতি দুলালসহ দলের কতিপয় নেতারা এই বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারকে অবগত করেছি।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আকবর বলেন, "সাংবাদিকের ওপর এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। আমরা অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী জানান,রাতের আঁধারে একটি চক্র বালু উত্তোলন করছে,এমন ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে সাংবাদিক আহত হয়েছেন শুনেছি। অবৈধভাবে বালুউত্তলনের পিছনে কারা কারা জড়িত তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আসিফ
