ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ মার্চ ২০২৫, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

ডিউটি টাইমে প্রাইভেট চেম্বার করেন ডাক্তার!

বেলাল হোসেন রিয়াজ, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা।

প্রকাশিত: ১১:০৬, ১ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১১:৩৮, ১ মার্চ ২০২৫

ডিউটি টাইমে প্রাইভেট চেম্বার করেন ডাক্তার!

ছবি: সংগৃহীত।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজের ইচ্ছামতো চেম্বারে আসা-যাওয়া করেন নাক, কান, গলার ডাক্তার মনিরুল ইসলাম। কাগজে কলমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  নাক, কান, গলার বিভাগ থাকলেও বাস্তবে ডাক্তারের দেখা মিলছে না। 

স্থানীয়দের অভিযোগ ডাক্তার মনিরুল ইসলামের ডিইটি টাইমে প্রাইভেট চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অথচ উপজেলার ৫ লক্ষ লোকের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে নাক কান গলার একজন ডাক্তার। অভিযোগ রয়েছে, তিনি হাসপাতালে এসে খাতায় স্বাক্ষর করে প্রাইভেট চেম্বারে চলে যান। এ বিষয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের ডাক্তার বেলায়েত হোসেন কোন তদারকি না থাকায় হাসপাতালের ডাক্তার মনিরুল ইসলাম এর মত প্রায় ডাক্তারের এমন আচারণে ক্ষুব্দ সেবা নিতে আসা রোগীরা। সরকারী হাসপাতালের এমন আচারণের বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জনের সহযোগিতা কামনা করেন স্থানীয় বাসিন্দরা। 

অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম কোন নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা না করে  হাসপাতালে আসা-যাওয়া করেন যেমন খুশি তেমন। প্রতিদিন সরকারী হাসপাতালে তিন থেকে চারশত রোগী সেবা নিতে আসে ,কিন্তু ডাক্তারের দেখা না পেয়ে আবার বাড়িতে ফেরত চলে যায়। যাদের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভাল তারা প্রাইভেট চেম্বারে গিয়ে ডাক্তার দেখায় অন্যরা হতাশ হয়ে ফিরে যায়। সরকারী হাসপাতালে ডাক্তারের এমন আচারণ প্রতিদিনের নিয়মে পরিণত হয়েছে।  

সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখার কথা থাকলেও ডাক্তার মনিরুল বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে, কাউকে জবাবদিহি না করে নিজের ইচ্ছামতো বেলা সাড়ে ১০টার পর হসপাতালে আসলে ও যাওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। আবার কখনো ইচ্ছা হলে ছুটি ছাড়াই হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকেন মনিরুল। এতে ভোগান্তির চরম আকার ধারণ করে তার বিভাগটিতে সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে।

পাটোয়ার গ্রামের ইব্রাহিম বলেন, ‘কানের সমস্যা নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় হাসপাতালে আসি। বেলা ১১টা বাজতেছে কিন্তু ডাক্তার এখনো আসে নাই। আবার দেরি করে হাসপাতালে আসলে ও সমস্যা, ডাক্তার চলে যায়।’

পৌরসভার মান্দ্রা গ্রামের সাব্বির হোসেন  জানান, ‘ডা. মনিরুল বেলা ১১ টায় হাসপাতালে এসে চেম্বারে বসে রোগী না দেখেই নাস্তা করেন। পরে ধীরে ধীরে রোগী দেখা শুরু করেন।কয়েকজন রোগী দেখে আবার চেম্বার ছেড়ে চলে যান।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডাক্তার মনিরুলের চেম্বারে গেলে তাকে খুজে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মু. বেলায়েত হোসেন বলেন,  ‘তার ব্যাপারে আগে ও একাধিকবার অভিযোগ এসেছে এবং তাকে শোকজ করা হয়েছে। তাকে ডেকে আমি আবার জিজ্ঞাসা করব।’

জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জেন ডাক্তার রেজা মুহাম্মদ সরোয়ার আকবর  বলেন, ‘আমি পুরো বিষয়টি  অবগত নই। তবে এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

নুসরাত

×