
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব)
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের প্রতি সবসময় সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব)। বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর চারটি থানা পরিদর্শনকলে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভোরের দিকে দায়িত্বে শিথিলতা দেখায়। এ সুযোগে সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা নানারকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি, তারা যেন এ সময়েও সজাগ ও সতর্ক থাকে।
গুলশান থানায় দায়িত্বে অবহেলা করায় এক এসআই ও এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জনগণ যাতে নির্বিঘেœ ঘুমাতে পারে ও নির্ভয়ে চলাফেরা করতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মনিটরিং করার জন্য বাহিনীর পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের অফিসারদেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ফোর্স ও টহলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক ও সজাগ রয়েছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে স্থাপিত চেকপোস্টগুলোও ফাংশন করছে। যৌথবাহিনীর অপারেশনও ভালোভাবে চলছে। থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চলছে। থানাগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা দেখতেই এ পরিদর্শন।
চলমান যৌথ অভিযান আর কতদিন চলবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে যৌথ অভিযান বন্ধ করা হবে। তবে অন্যান্য অভিযান চলমান থাকবে। তিনি আরও জানান, গুলশান থানায় দায়িত্বে অবহেলা করায় এক এসআই ও এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
তিনি ডিউটি অফিসারসহ কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন। পথে তিনি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার চেকপোস্ট ও কালশী মোড় চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন এবং দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলেন।
তাছাড়া উপদেষ্টা মিরপুর থানা মোড় ও টেকনিক্যাল মোড়ে উপস্থিত সাধারণ জনগণের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের খোঁজখবর নেন ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। উপস্থিত জনতা বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা তার বারিধারার ডিওএইচএসের বাসা থেকে বের হয়ে ইসিবি চত্বর, কালশী, পল্লবী, মিরপুর-১০ হয়ে মিরপুর থানায় পৌঁছান। পরিদর্শন শেষে সেখান থেকে মিরপুর-১ হয়ে দারুসসালাম থানায় যান। দারুসসালাম থানা থেকে টেকনিক্যাল মোড়, শ্যামলী হয়ে আদাবর থানা পরিদর্শন করেন। পরে সেখান থেকে মোহাম্মদপুর থানায় যান।
মোহাম্মদপুর থানা পরিদর্শন শেষে ধানমন্ডি ২৭, সংসদ ভবন, বিজয় সরণি, মহাখালী ও বনানী হয়ে বারিধারার বাসায় ফিরে আসেন। থানাগুলো পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা থানার অভ্যর্থনা কক্ষ, হাজতখানাসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা ঘুরে দেখেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরে সেখান থেকে শাহবাগ মোড়, মৎস্য ভবন, মগবাজার, হাতিরঝিল, পুলিশ প্লাজা হয়ে গুলশান থানায় যান। গুলশান থানা থেকে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল হয়ে বারিধারার বাসায় ফেরত আসেন। এ সময় উপদেষ্টা আশপাশের কিছু অলিগলিও ঘুরে দেখেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবারের পরিদর্শন নিয়ে জানানো হয়, উপদেষ্টা তার বারিধারা ডিওএইচএসের বাসা থেকে বের হয়ে বনানী মোড়, বিজয় সরণি (নভোথিয়েটার), মানিক মিয়া এভিনিউ, কলাবাগান, ইডেন কলেজ হয়ে নিউমার্কেট থানা পরিদর্শন করেন।