ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১

বাউফলে ট্রলার বোঝাই তরমুজ লুট

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী।

প্রকাশিত: ২১:৫১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২২:০১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাউফলে ট্রলার বোঝাই তরমুজ লুট

বাউফলের নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে ক্ষেত থেকে তরমুজ পরিবহনে বাধা দেয়া হচ্ছে। এতে তরমুজ কেটে বিপাকে পড়েছেন চাষীরা। স্থানীয় বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীরা এই বাধা দিচ্ছেন।

আজ বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে মোসলেম উদ্দিন মোচন নামের এক ব্যক্তি বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ  করা হয়েছে, মোসলেম উদ্দিন মোচন এ বছর চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের নিমদীর চরে প্রায় ১২৩ একর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ করেছেন। রমজানের বাজার ধরতে তরমুজ কাটা শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার তিনি ক্ষেত থেকে তরমুজ কেটে  ভাড়া করা ট্রলিগাড়িতে উঠানো শুরু করলে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড যুবদলের আহবায়ক  মো. রমিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল গিয়ে বাঁধা দেন। 

এ সময় তারা গাড়ি চালককে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন এবং হুমকি দিয়ে বলেন, তাদের পছন্দের গাড়ি ব্যতীত অন্য কোনো গাড়িতে তরমুজ নেয়া চলবে না। এতে কাটা তরমুজ নিয়ে বিপাকে পড়েন তরমুজ চাষীরা। 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ৫ আগষ্টের আগে আওয়ামী লীগ দলীয় স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ভাতিজা চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলকাচ মোল্লা তাদেরকে (চাষীদের) জিম্মি করে হয়রানি করতেন, ঠিক তেমনি স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তার চেয়েও বেশি হয়রানি করতেছেন। একই অভিযোগ করেছেন মো. মিলন, মো. পারভেজ, মো. ইউসুফ ও মো. ইয়াকুবসহ আরও কয়েকজন চাষী।

যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যুবদল নেতা মো. রমিজ উদ্দিন।  তিনি বলেন, এসবের সঙ্গে তিনি জড়িত না। এসব অভিযোগ সত্য না।

এ বিষয়ে বাউফল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাহাবুদ্দিন হাওলাদার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,‘সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। চাষীদের ভাড়া করা গাড়িতে তরমুজ পরিবহনে ফের কেউ বাঁধা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অপর দিকে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের এক চাষীর তরমুজভর্তি একটি ট্রলার ছিনতাই করে ট্রলার থেকে এক হাজার তরমুজ লুট করে নেয়া হয়েছে। বিনষ্ট করা হয়েছে আরও দেড় শতাধিক তরমুজ।

এমন অভিযোগ উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন খানের ছেলে মো. সাইফুল খানের বিরুদ্ধে। এ তথ্যের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। 

স্থানীয় চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার তরমুজ কেটে ট্রলারে উঠিয়ে বরিশাল নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মো. মানিক মিয়া নামে এক চাষী। দুপুর একটার দিকে বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেনের ছেলে সাইফুল দলবল নিয়ে চর নিমদী থেকে তরমুজ ভর্তি ওই ট্রলারটি ছিনিয়ে নেয়। ওই সময় তারা ট্রলার চালক ও চাষী মানিক মিয়াকে মারধর করে এবং মানিক মিয়ার সঙ্গে থাকা পাঁচ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যান। পরে তাঁরা ট্রলারটি নিমদী লঞ্চঘাট এলাকায় নিয়ে এক হাজার পিচ তরমুজ অন্য ট্রলারে উঠিয়ে নিয়ে যান। দেড় শতাধিক তরমুজ বিনষ্ট করে। 

খবর পেয়ে আজ বুধবার সরেজমিনে যান বাউফল থানা পুলিশ। এ বিষয়ে সাইফুলের ফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি ধরেননি। বাউফল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাহাবুদ্দিন হাওলাদার বলেন,‘ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগি চাষীর লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নয়া হবে।

রিফাত

×