
সাজেক ট্রাজেডিতে এখনো চারিদিকে চলছে জীবন বাঁচার হা-হা-কার। এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাড়াঁনোর প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। সহায় সম্বলহীন মানুষেরা একটু সাহায্যের আশায় প্রহর গুনছেন। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
বুধবার বিকালে সাজেক ট্রাজেডি সরেজমিনে দেখার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা সেখানে গিয়েছেন। তিনি সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন ও তাদের প্রতি সমবেদনা জানান। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কংকন চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব খন্দকার মুশফিকুর রহমান, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সদস্য ও মাঠ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ।
সাজেকের রুইলুই ভ্যালির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকেরা উপদেষ্টার নিকট সাজেকের প্রকট পানির সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। এছাড়া সেখানে স্কুল, একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন করারও দাবি জানান। এছাড়া নিঃস্ব এই মানুষগুলো ঘুরে দাড়াঁনোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা করার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান। এলাকাবাসীর দাবি অত্যন্ত সহানুভূতির সহিত বিবেচনা করার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, ৩৫ পরিবারের মধ্যে ৭০ টন চাল বরাদ্দের ঘোষণা দেন। এছাড়া জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে ঘরের টিন ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা এবং জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের বিভিন্ন সহযোগিতা করা হবে বলে জানান।
সেখানে দোকান, কটেজ, রির্সোট বসতঘর ও রেস্তোঁরা মিলে যে ৯৮টি স্থাপনা পুড়ে গেছে, তাদের প্রত্যককে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতি দোকান ও কটেজকে ২০ হাজার টাকা ও প্রতি ঘরকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা হারে ১৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা অনুদান হিসাবে প্রদান করেছেন। ৩৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দিয়েছেন। তৎক্ষণাৎ সহায়তা হিসাবে শুকনো খাবারও দিয়েছেন। এছাড়া বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রায় সাত'শত কম্বল বিতরণ করেছে।
দেশের একমাত্র মেঘের সঙ্গে মিতালি করা মনোমুগ্ধকর পর্যটন কেন্দ্র সোমবার আগুনে পুড়ে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে। উক্ত দুঃখজনক ঘটনার বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে আসল ঘটনা উৎঘাটনের জন্য রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক, উপ পরিচালক ও রাঙ্গামাটি স্থানীয় সরকারকে আহবায়ক ও বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সহকারি পুলিশ সুপার বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিস পরিচালক, নির্বাহী প্রকৌশলী দীঘিনালা। এরা ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রকৃত কারণ উৎঘাটন করে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করবে।
ইমরান