
ছবি: সংগৃহীত
গোটা একটি এলাকায় চাষ হয়েছে টনকে টন গাঁজা। এই পণ্য রপ্তানি করে কোটি টাকা উপার্জন করেছে ব্যবসায়ীরা। সেই অর্থ দিয়ে হতো শিক্ষা, চিকিৎসার মত জনকল্যাণমূলক কাজ।
ব্রিটিশ সরকারের শাসনামলে, বাণিজ্যিকভাবে গাঁজা চাষ ও বিপননের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল নওগাঁর গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকা। তৈরি করা হয়েছিল কো-অপারেটিভ সোসাইটি, যা গাঁজামহল নামে পরিচিত।
অধিক লাভজনক হওয়ায়, ১৮৭৭ সাল থেকে এই অঞ্চলে গাঁজা চাষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরে নওগাঁর তিনটি সার্কেলে গাঁজা চাষ শুরু হয়। গাঁজা উৎপাদনকে কেন্দ্র করে, ১৯১৭ সালে নওগাঁ গাঁজা কাল্টিভেটরস কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি সমবায় সমিতি গঠিত হয় এবং সে বছরই সমিতিটি সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন প্রাপ্ত হয়। এভাবে ভিত্তি রচিত হয় উপমহাদেশের বৃহত্তম সমবায় সমিতির।
১৯১৮ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৫৫০০০ মণ গাঁজা উৎপাদন হতো। তবে, জেনেভা কনভেনশনে মাদকদ্রব্য বিরোধী চুক্তি অনুযায়ী ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে গাঁজা চাষ নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। এতে ধীরে ধীরে বেকার হতে থাকে এই অঞ্চলের গাঁজা চাষীরা।
বছরের জুন জুলাই ছিল গাঁজার চারা তৈরির মাস। উঁচু মজবুত বাঁশ বা কাঠের বেড়া দিয়ে বীজতলা তৈরি করা হতো। বেড়ার চারপাশে চৌকি নির্মাণ করে পাহারা দিত সশস্ত্র পুলিশ। একই সঙ্গে, বীজতলার অভ্যন্তরে বাঁশের টং তৈরি করে পাহারা দিত চাষীরা। গাঁজা চাষ পুরোপুরি বন্ধ হওয়ায় অকেজো হয়ে পড়েছে সোসাইটির লাল রঙের ভবনটি। হয়নি বহুদিন সংস্কার।
তবে, একটি গোষ্ঠীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন, বলে মনে করেন গবেষকরা।
সূত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=vH3YvNSd8U0
শিলা ইসলাম