ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১

ফ্যাসিবাদের দোসর হওয়ার অভিযোগ

হাবিপ্রবির ৪ কর্মকর্তা ও এক শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর

প্রকাশিত: ০০:৫৩, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

হাবিপ্রবির ৪ কর্মকর্তা ও এক শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ

হাবিপ্রবি কর্মরত চার কর্মকর্তা ও এক ছাত্রকে পুলিশের হাতে

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) কর্মরত চার কর্মকর্তা ও এক ছাত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। সোমবার দুপুরে ওই কর্মকর্তাদের কর্মস্থল থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তারা। 
এর আগে রবিবার রাতে জুলাই অভ্যুত্থানে হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের একটি কক্ষ থেকে রামিম হোসেন নামের এক ছাত্রকে প্রশাসনের হাতে তুলে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। পরে এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ড এক্সটেনশন কর্মকর্তা (ফিশারিজ) রাব্বি শেখ, শেখ শাহ আসাদুল্লাহ সালেহীন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ আলম সিকদার ও সেকশন কর্মকর্তা ইলিয়াস দেওয়ান। তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির বিভিন্ন পদে ছিলেন। এ ছাড়া রামিম হোসেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হয়ে, গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন পদে চাকরি নিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসে আসতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু তারপরও তারা অফিসে আসছিলেন। অবশেষে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের সম্মানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাছে নিয়ে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের হাতে তুলে দিয়েছেন।’

শিক্ষার্থী রামিম হোসেনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী একটি আবাসিক হলে অবস্থান করছিলেন। হামলার ঘটনায় তার সম্পৃক্ত থাকার বিভিন্ন ফুটেজ ও ছবিতে বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অস্থিতিশীল কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায়, রাতে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শামসুজ্জোহা বলেন, ‘রবিবার রাতে একটি আবাসিক হলে রামিম হোসেনকে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আটক করে প্রশাসনকে জানান। রামিম হোসেনের হাতে অস্ত্র সংবলিত ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখান। পরে ওই শিক্ষার্থী ছবিটি তার মর্মে স্বীকারও করেন এবং নিজে থেকেই তাকে পুলিশের হাতে দেওয়ার কথা জানান। এ ছাড়া দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তা বিভিন্ন হামলার ঘটনায় যুক্ত থাকা ও ছাত্রলীগের পদধারী হওয়ায়, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা তাদের আটক করে পুলিশের হাতে দিয়েছেন।’
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তাকে আটক করে আমাদের জানিয়েছেন। আমরা তাদের থানায় নিয়ে আসি। তাদের প্রত্যেকের নামে থানায় আগের মামলা আছে। জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় যুক্ত থাকায় নতুন করে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার বিকেলে কোর্টে চালান দেওয়া হলে, বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

×