
ছবি : সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা শাখার সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান আলীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কুমারখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এলেঙ্গীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইনের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ওই জামায়াত নেতা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আসাদুজ্জামান আলী এলেঙ্গীপাড়ার বাসিন্দা আবদুস সামাদের ছেলে। তিনি বিবাহিত। বাবার বাড়ির সঙ্গেই তাঁর পৃথক বাড়ি।
আসাদুজ্জামান বলেন, তাঁর বাবা আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আজ একটা বিষয় নিয়ে তাঁর বাবার সঙ্গে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইনের তর্কবিতর্ক হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই জামায়াতের নেতার সঙ্গে বিএনপির কিছু লোকজন আসাদুজ্জামানের বাসায় এসে ভাঙচুর করেন। তবে পাশেই তাঁর বাবার বাড়িতে কোনো ভাঙচুর চালানো হয়নি। হামলা-ভাঙচুরের সময় বাসায় তাঁর মা, স্ত্রী ও বোন ছিল। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। তাঁকেও গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তাঁর মাকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। বাসার ভেতরে আসবাবপত্র, টিভি, সোফা, ফ্রিজসহ যাবতীয় জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছেন। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে এই তাণ্ডব চালিয়েছেন তাঁরা।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘সামনে একটি রাজনৈতিক দল গঠন হবে। সেই দলে হয়তো নেতৃত্ব দেব। এটাকে দমাতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি কুমারখালীতে প্রথম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নামি। এই থানাতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে, সব কটির আমি বাদী। আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। আজকের ঘটনায় আমি খুবই ট্রমার মধ্যে আছি। কী করব, বুঝতে পারছি না। জেলার নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘বিগত কয়েক দিন ধরে আমার বাবার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিজ থেকেই পদ ছেড়ে দেব। কিন্তু এভাবে অন্যায়ভাবে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর লুটপাট করা কাম্য নয়।’
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে কুমারখালী উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসাদুজ্জামান ও তাঁর বাবার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। কুমারখালীতে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা চাঁদাবাজি করেন, মানুষকে মারধর করে ও হুমকি দেন। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁর বাড়ি হামলা ভাঙচুর করেছে। এর সঙ্গে কোনো সংগঠন জড়িত না। আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার মুখপাত্র পারভেজ মোশাররফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। যতটুকু জানতে পেরেছি আসাদুজ্জামানের বাবার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াত, বিএনপিএর একটা অংশ বা স্থানীয় লোকজনের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। আসাদুজ্জামানের বাবার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর করা ঠিক নয়।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ হামলা-ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম গিয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র : https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/6wlxxawh6b
ফয়সাল