
ছবি: সংগৃহীত
পিলখানায় দক্ষ সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা পরিকল্পিত নাকি বিদ্রোহ? এই জট খোলেনি দীর্ঘ ১৬ বছরেও। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের প্রশ্ন উঠলেও মেলেনি তার উত্তর। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন, জড়িতদের বিচার ও নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তির অপেক্ষায় এখনো স্বজনেরা।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯। পিলখানার দরবার হলে তান্ডবের শুরুর দিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তামান্নার মা নার্গিস ফাতেমা, যিনি ছিলেন বিডিআর হাসপাতালের সেবিকা। পরে বিডিআর হত্যা মামলায় তার বাবা সুবেদার আব্দুল জলিল, দুইভাই সিপাহি আল আমিন, রাব্বি ও স্বামী সিপাহি আরাফাত হন কারাবন্দি। সেদিন তামান্নার বিয়ের মাত্র ২১ তম দিন। তারপর, একা একা কেটে গেছে ১৬ টি বছর।
তামান্না বলেন, সেদিন তিনটি গুলিতে বিদ্ধ হন তার মা। কিন্তু তার লাশ খুঁজে পাননি তারা। তামান্নার বাবা কারাবন্দি অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করেন। এতোকিছুর পরেও যেন কোনো অভিযোগ নেই তামান্নার। শুধু ফিরে পেতে চান দুই ভাই আর স্বামী সংসার। তিনি বলেন, বিনা অপরাধে কারাভোগ করছেন তার স্বামী আর দুই ভাই। তারা অসুস্থ হয়ে পড়লেও চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের আরেক ভুক্তভোগী মাসুদ। সহোদর সিপাহি মামুনকে ফিরে পাবার আকাঙ্ক্ষা তার। মাকে ভাইয়ের কাছে নিতে না পারার আক্ষেপ, ভাইয়ের সংসার না হওয়া, বাবার অসুস্থতা সব মিলে অসহায় মাসুদ। ৩৮০ জন বন্দি পরবর্তীতে খালাস পেলেও বের হতে পেরেছিলেন ১৭৮ জন। সিপাহি মামুন জামিন পান নি। এর কারণ তারা আজও জানতে পারেননি। তখন তার বাবা স্ট্রোক করেন।
বিডিআর সদস্যদের আইনজীবী জানান, সম্প্রতি আইসিটি ট্রাইবুনালে অভিযোগ দিয়েছেন পিলখানায় হত্যার স্বীকার সেনা কর্মকরতাদের স্বজনরা। আগের ধারাবাহিকতায় ১৩ মার্চ আদালতের নির্ধারিত তারিখে অনেক বন্দির জামিন প্রত্যাশা তার। তবে নতুন কারো নাম আসলে প্রশ্ন উঠবে তাহলে আগের বিচারটার কী হবে? যেহেতু একই ফুটিংয়ে ১৭৮ জন মুক্তি পেয়েছে, সুতরাং যাদের জামিন পেন্ডিং আছে তারাও জামিন পাবেন।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, শুধু জামিন প্রাপ্তি বা নাকোচ নয় প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়বিচারের স্বার্থে কাজ করছে বিচার বিভাগ। তিনি বলেন, ন্যায়বিচার একটি বড় বিষয়। তাই জামিন প্রাপ্তিটাই ন্যায়বিচার এমনটা বলা যাবে না। তবে আগের চেয়ে বিচারব্যবস্থা স্বাধীন আছে এই মুহূর্তে, এখানে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
মায়মুনা