
যশোর : মণিরামপুরের হরিণা বিলের বেড়িবাঁধ পানির চাপে ভেঙে গেছে। ভাঙা বাঁধ সংস্কারের চেষ্টা করছেন কৃষকরা
হরিণা বিলের বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত এক হাজার বিঘা বোরো ধান পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বেড়িবাঁধ সংস্কারে শত শত গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার গভীর রাতে উপজেলার হরিণা বিলের বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে আবাদকৃত প্রায় ১২শ’ বিঘার বোরো ধানখেত এবং মাছের ঘের। ধানের খেত ও মাছের ঘের বাঁচাতে মাইকিং করে বাঁশ-খুঁটি ও ঝুড়ি-পালা নিয়ে শত শত গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বেড়িবাঁধ সংস্কারে নেমেছেন। এরপরও ভাঙন রোধসহ পানি আটকাতে না পারায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
এদিকে খবর পেয়ে সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এ সময় বেড়িবাঁধ সংস্কারে স্বেচ্ছাশ্রমীদের অর্থনৈতিকসহ সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এ ছাড়া দ্রুত বাঁধ নির্মাণে সেখানে উপস্থিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
জানা যায়, রবিবার রাত ৪টার দিকে আকস্মিক হরিণা খালের ২০ থেকে ২৫ হাত বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা এলাকায় মাইকিং করে নিজেদের উদ্যোগে রবিবার দিনভর চেষ্টা করে বাঁধ বেঁধে পানি আটকাতে ব্যর্থ হন। এতে করে সেখানে কোমর পানি জমেছে। ইউপি সদস্য দিপক কুমার বলেন, হরিণা বিলে বিমল ও আছাদের বিশাল আয়তনের দুইটি মাছের ঘের রয়েছে। ঘের দুইটির মাঝখানে হরিণা খালের অবস্থান। খালের পাড় সরু হওয়ায় ঘের কেটে চওড়া করে পাড় বেঁধে তালের চারা রোপণ করা হয়েছে। দিপক মেম্বার বলেন, ঘের মালিকের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বোরো মৌসুম আসলে ঘেরের পানি সেচে হরিণা ব্রিজের মুখে বাঁধ দিয়ে খালে পানি ফেলা হয়। খালটি কেশবপুর উপজেলার গাইয়েখালি গেট হয়ে নদীর সঙ্গে মিশেছে। এবার বোরো মৌসুম শুরুর আগে বিমলের ঘেরের পানি জমির মালিকরা নিজ খরচে সেচে ঘেরে বোরো আবাদ করেছে। আর ঘেরের মধ্যে সরু করে আর একটি ঘের কেটে সেখানে ঘেরের মাছ ধরে রেখেছেন ঘের মালিক বিমল। হরিণার খালের পানি গাইয়েখালি গেট দিয়ে না সরায় এখন খালে পানি টইটম্বুর হয়ে আছে।
স্থানীয়রা বলছেন, রবিবার রাত চারটার দিকে হঠাৎ হরিণা খালের পাড় ভেঙে বিমলের ঘেরের মধ্যের অন্তত ১ হাজার ২শ’ বিঘা বোরো আবাদে পানি ঢুকে পড়েছে। সকালে এলাকায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসী এসে বাঁশ খুঁটি দিয়ে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে করে বিমলের ঘেরের ভেতরের ৯০০-১০০০ বিঘা বোরো আবাদ এখন কোমর পানিতে তলিয়ে আছে। রাতে পানি ঢুকে কোন পর্যন্ত তলিয়ে যায় সেটা নিয়ে এলাকার সবাই চিন্তিত। আর বিমলের ঘেরের মাছ পাশের যে ঘেরে রাখা ছিল সেটাও প্লাবিত হয়ে অন্তত কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।