ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

সাঁকো-সেতু নিয়ে বিড়ম্বনা

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সাঁকো-সেতু নিয়ে বিড়ম্বনা

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার ব্রহ্মগাতী এলাকায় ভাঙা সেতু। কালকিনিতে পড়ে আছে সেতু, ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

বাগেরহাটে ভাঙা পুলে ছয় গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

চিতলমারী উপজেলার ব্রহ্মগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের লোহার পুলটি ভেঙে যাওয়ায় শিশু শিক্ষার্থীদের চরম ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। শুধু শিশু শিক্ষার্থী নয়, ওপারে অবস্থিত মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে মুসল্লিদেরও ভোগান্তি হচ্ছে।
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন ওই পুল দিয়ে ৬ গ্রামের শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। পুলটি দীর্ঘদিন ধরে কোনো মেরামত বা সংস্কার না করায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পুলের রড সিমেন্টের ঢালাই পাটাতন ভেঙে চিত্রা নদীতে পড়ে গেছে। ফলে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় থাকেন।
সুরশাইল গ্রামের শিক্ষার্থী অভিভাবক আসমা বেগম, মিনারা বেগম, শারমিন আক্তার সুমি ও কুরমনি গ্রামের কাবেরী বিশ্বাস জানান, তাদের কোমলমতি শিশুরা ব্রহ্মগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। ধারে-কাছে স্কুলে যাওয়ার পারাপারের জন্য একমাত্র ওই পুলটিই ভরসা। তাও দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা। তাই তারা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভোগেন। উপজেলা প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সেতু আছে, তবে পার হতে
হয় বাঁশের সিঁড়ি দিয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালকিনি, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার দুটি ইউনিয়নের শাখা নদের ওপরে অপরিকল্পিতভাবে প্রায় দশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না। এতে করে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এখন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এদিকে সংযোগ সড়ক না থাকায় বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে একটি সেতু পাড় হচ্ছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়াও কালকিনি এবং ডাসার উপজেলায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করলেও কোনো প্রকার কাজে আসছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে দুই বছরের বেশি একই স্থানে চাকরি না করার বিধান থাকলেও এসব নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে প্রায় চার বছর একই উপজেলায় উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি করে আসছেন মো. রেজাউল করিম। তাই তিনি একই স্থানে দীর্ঘ কয়েক বছর চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে আসছেন। অপরদিকে তিনি এখানে যোগদানের প্রায় চার বছরের মধ্যে কয়েকবার বদলির আদেশ হলেও তিনি অদৃশ্য শক্তির বলে বহালতবিয়তে রয়েছেন। ফলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণ জনগণের মাঝে। তবে অপরিকল্পিতভাবে (এলজিইডি) সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করলেও সাধারণ জনগণের কোনো প্রকার কাজে না আসার ব্যর্থতার দায়ে কর্তৃপক্ষের কাছে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমকে এ উপজেলা থেকে দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক, ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ, কৃষক জলিল ও জব্বার, ব্যবসায়ী সাদিক ও নাজমুল, শিক্ষার্থী মাসফিক ও তাওসিফ, ইউপি সদস্য সমিরসহ বেশ কয়েক সচেতন ব্যক্তি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা সেতুতে বাঁশের সিঁড়ি দিয়ে পার হতে হচ্ছে। আসলে এর ব্যর্থতা একই স্থানে প্রায় চার বছর চাকরি করা উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমের। তাই আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে তার দ্রুত অপসারণ করার দাবি যানাই। তবে আমরা সুনেছি তার কয়েকবার বদলি হলেও রেজাউল স্যারের উপরের ক্ষমতা থাকায় বদলির আদেশ বাতিল করা হয়। উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, জনগণের সমস্যার সমাধান হবে। তবে আমি কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় এখানে আছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, ওই সেতু দুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ করার বিষয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। আশা করি দ্রুত এর সমাধান হবে।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল চন্দ্র কৃত্তনীয়া বলেন, এখন থকে সেতুর সংযোগ সড়কের কাজসহ সকল ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ দ্রুত গতিতে হবে। তবে আশা করি ফেব্রুয়ারি মাসের ভেতরে কালকিনি উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম এ উপজেলা থেকে চলে যাবে।
লোহাগাড়ায় নদী পারাপারে ঝুঁকিপূর্ণ একটি সাঁকো

সংবাদদাতা, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম ॥ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে পার্বত্য বান্দরবানের থেকে নেমে আসা টঙ্কাবতী নদী। সেই নদীর ওপর কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি একটি নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে আমিরাবাদের মুহুরীপাড়া, ঘোনাপাড়া, চৌধুরীপাড়া, রাহাত আলী পাড়াসহ কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ।
১৫ বছর আগে সাঁকোটি স্থানীয় লোকজনদের অর্থায়নে তৈরি করেছেন এলাকাবাসী। বৃষ্টির সময় নদীর পানিতে সাঁকোটি ভেঙে যায়। তাই শুষ্ক মৌসুমে পুনরায় গ্রামবাসী নিজেদের অর্থে মেরামত করে। বৃষ্টির সময় স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীসহ এলাকার বয়স্ক লোকদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। খালের অপর পাড়ে রয়েছে উত্তর আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর আমিরাবাদ এমবি উচ্চ বিদ্যালয় ও বার আউলিয়া ডিগ্রি কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম কষ্ট ভোগ করতে হয়।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় টঙ্কাবতী নদীর ওপর সাঁকো
শিক্ষার্থীদের দাবি এ  নদীর ওপর একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের। এলাকাবাসীর অভিযোগ জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাস দিয়ে গেছে অথচ কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এমতাবস্থায় বর্তমান সরকারের প্রতি তাদের চাওয়া-পাওয়াও অনেক। তবে একটি ব্রিজের চাহিদা পূরণে প্রার্থনা এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টির সময় এ সাঁকো দিয়ে পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। ১০ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান, তারা এ সাঁকো দিয়ে নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে ঝুঁকি নিয়ে। এ ব্যাপারে লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী জানান, প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে ব্রিজ তৈরির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

×