
ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশের গ্রামবাংলার অনেক ঐতিহ্যবাহী খেলা সময়ের সাথে সাথে বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার, নগরায়ণ, খেলাধুলার সুযোগ সংকুচিত হওয়া এবং তরুণদের আগ্রহের পরিবর্তন এর প্রধান কারণ।
নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় খেলা উল্লেখ করা হলো, যা বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে:
১. কাবাডি বা হাডুডু
কাবাডি একসময় বাংলাদেশের জাতীয় খেলা ছিল এবং গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। তবে ক্রিকেট ও ফুটবলের জনপ্রিয়তার কারণে এটি এখন আগের মতো জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, হাডুডু বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা, যা গ্রামে গ্রামে হতো। তবে এখন এর আয়োজন কমে গেছে এবং নতুন প্রজন্মের আগ্রহও কমছে।
২. গোল্লাছুট
এই দলগত খেলা একসময় শিশু-কিশোরদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু শহরাঞ্চলে খেলার মাঠের অভাব এবং মোবাইল গেমের প্রতি আসক্তির কারণে এটি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
৩. দাড়িয়াবান্ধা
এটি শিশুদের অন্যতম মজার খেলা ছিল, যেখানে মাঠে দাগ কেটে দলে ভাগ হয়ে খেলা হতো। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার চাপ এবং মাঠ সংকটের কারণে এটি বিলুপ্তির পথে।
৪. বৌচি (চড়কি বা কানামাছি)
এটি শিশুদের বিনোদনমূলক খেলা হলেও এখন আর খুব একটা দেখা যায় না। প্রযুক্তির কারণে শিশুদের বিনোদন এখন মোবাইল ও ভিডিও গেমের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।
৫. লাঠিখেলা
একসময় বাংলাদেশে লাঠিখেলা প্রচলিত ছিল, যা মূলত শক্তি ও কৌশল প্রদর্শনের একটি খেলা। এটি লোকসংস্কৃতির অংশ হলেও বর্তমানে খুব কম এলাকায় এর চর্চা দেখা যায়।
৬. নৌকাবাইচ
একসময় গ্রামবাংলার বড় উৎসব ছিল নৌকাবাইচ। নদীর সংখ্যা কমে যাওয়া, জলবায়ুর পরিবর্তন, এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এটি হারিয়ে যেতে বসেছে।
৭. বিলোনিয়াবাইচ (গরুর দৌড়)
এই ঐতিহ্যবাহী খেলা বাংলাদেশে একসময় জনপ্রিয় ছিল, তবে বর্তমানে কৃষিজীবীদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং মেকানিক্যাল কৃষি ব্যবস্থা চালুর ফলে এটি বিলুপ্তপ্রায়।
৮. ঘুড়ি উড়ানো
শহরাঞ্চলে ঘুড়ি উৎসব কমে গেছে এবং ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন আসক্তির কারণে তরুণদের আগ্রহও কমে গেছে।
এগুলোর সংরক্ষণ এবং প্রচারের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া জরুরি, যেমন স্কুল-কলেজে ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো পুনরায় চালু করা, স্থানীয় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
নুসরাত