ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১

শহীদ মিনারে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শহীদ মিনারে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা

শহীদ মিনারে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, সবকিছু মিলিয়ে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। দুই-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বড় কোনো ঘটনা নেই। একইসঙ্গে, যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে আছে, তাদের শহীদ মিনারে কোনো ইন্টারেস্ট নেই। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ইন্টারেস্ট ভিন্ন ক্ষেত্রে। চাঁদা আদায় বা এটা-সেটায় তাদের ইন্টারেস্ট।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উদ্যাপন উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
শহীদ মিনারে ব্যাপক জমায়েতের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এজন্যই আমি ভিভিআইপি, ভিআইপিদের বিদায়ের পরে ঢাকাবাসীকে আসার অনুরোধ করছি। তার জন্য আমি সময় নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমরা মনে করছি, ১২টা ৪০ থেকে ১২টা ৪৫, এ সময়ের ভেতরে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য ভিআইপিদের কার্যক্রম শেষ হয়ে যাবে। তারপর সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে।

এজন্য আমি সবাইকে অনুরোধ করছি এ সময়টা যেন একটু মেনে আসেন। তাহলে উনাদেরও একটু কষ্ট কম হবে। জমায়েতটাও কম হবে। সবদিক দিয়ে আমরা ইভেন্টের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হব। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপিত হবে এবং শহীদ মিনারে কয়েক স্তরে একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারও প্রথমে ভিভিআইপি, ভিআইপি এবং তারপর জনসাধারণ পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন। রাত ১২টা ৪০ মিনিটে জনসাধারণের জন্য পলাশী প্রান্ত অর্থাৎ পশ্চিম পাশ থেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সবাইকে অনুরোধ করব, যারা রাতে আসবেন উনারা যেন আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে আসেন।

আমি সবাইকে অনুরোধ করব, সবাই যেন বেদিতে পুষ্পমাল্য দেওয়ার সময় যথাযথ শৃঙ্খলা মেনে চলেন। পাশাপাশি যারা আসবেন, তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ নিজের নিরাপত্তা, মোবাইল, মানিব্যাগের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা তিন-চার স্তরে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথমে পাঁচটায়, পরে রাত আটটা থেকে ডিএমপির অফিসার ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। আজ বেলা ২টা পর্যন্ত আমাদের ফোর্স এবং অফিসাররা পুরো এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো আশঙ্কা দেখছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে চেকিং এবং ম্যানুয়ালি দেহ তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। কোনো দাহ্য পদার্থ বা বিস্ফোরক নিয়ে কেউ প্রবেশ করতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা থাকবে।
রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ল অ্যান্ড অর্ডার ইজ ভেরি গুড, ইনশাআল্লাহ। একটা-দুইটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বড় কোনো ঘটনা বলতে পারবেন না। আমি মনে করি বিচ্ছিন্ন এক-দুইটি, মেইনলি মোবাইল ছিনতাই ব্যতীত কোনো অপরাধ নেই। ল অ্যান্ড অর্ডার-এ কোনো সমস্যা নেই, এভরিথিং ইজ নরমাল ইনশাআল্লাহ।
উত্তরার ঘটনা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, দুইদিন আগে হয়েছে উত্তরাতে, যেটা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সে ঘটনার পাঁচজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার অফিসার, ফোর্স সবাই আমরা মনোবল ফিরে পেয়েছি এবং চমৎকারভাবে কাজ করছি। যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে আছে, তাদের এরিয়া অব ক্রাইম বা এরিয়া অব অপারেশন এক জিনিস। আর শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ ভিন্ন জিনিস। এখানে তাদের কোনো ইন্টারেস্ট নেই। 
শহীদ মিনার কেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার বলেন, আমাদের চারপাশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা রেডি আছে, যাতে সেখানে গাড়ি প্রবেশ করতে না পারে। যেহেতু এখানে ব্যাপক জনসমাগম হবে। সেজন্য মূলত সাতটি স্থানে রোড বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, শাহবাগ, নীলক্ষেত, শহীদুল্লাহ হল, হাইকোর্ট, চানখাঁরপুল, পলাশী ও বকশিবাজার ক্রসিং দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। এখান দিয়ে মানুষ আসতে পারবে না, একটা ছাড়া। শুধু পলাশী থেকে জগন্নাথ হল হয়ে শহীদ মিনারে যেতে পারবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দোয়েল চত্বর হয়ে বের হতে পারবেন।

×