ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

শ্রীপুরে অগ্নিকান্ডে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, শ্রীপুর

প্রকাশিত: ২০:০৯, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২০:১১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শ্রীপুরে অগ্নিকান্ডে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

গাজীপুরের শ্রীপুরে অগ্নিকান্ডে একটি মুদি দোকানসহ ১২ বসত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রত্যেক ঘরেই বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা বসবাস করতো। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত আড়াইটায় শ্রীপুর পৌসভার (৬ নং ওয়ার্ড) কেওয়া পশ্চিম খন্ড এলাকার আবুল হাশেম প্রধানের বাড়ীতে অগ্নিকান্ডের এ ঘটনা ঘটে।

ক্ষতিগ্রস্থ ভাড়াটিয়ারা জানান, তাদের প্রত্যেকের ঘরে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, ফ্রীজ, সেলাই মেশিন, টিভি, মেরসিপ, ওয়্যারড্রোব, বক্স খাট, চাউলের বস্তা এবং মূল্যবান আসবাবপত্র পুড়ে যায়। তারা দাবী করেন প্রায় দেড় ঘন্টার আগুনে তাদের প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ ভাড়াটিয়া এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ পরিকল্পিতভাবে কেউ বাড়ীর উভয় পাশের গেটের ছিটকানি বাহির থেকে লাগিয়ে শত্রুতামূলকভাবে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে এক ভাড়াটিয়ার স্কুল পড়ুয়া ছেলে সজীব (১৩) আহত হয়। সে রংপুরের কতোয়ালী থানার বাড়াইপাড়া গ্রামের ভগবতী রায়ের ছেলে। সজীব স্থানীয় চাঁন মিয়া মেমোরিয়াল একাডেমীর অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।

গাইবান্ধার সাদ্যুল্লাপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের পোশাক দম্পত্তি সোহাগ মিয়া ও শিউলী আক্তার জানান, দীর্ঘ দুই বছর যাবত আবুল হাশেম প্রধানের বাড়ীতে ভাড়া থেকে স্থানীয় সিজি গার্মেন্টস এবং নিউ প্যাক পোশাক কারখানায় চাকরি করে। রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ ঘুম ভাংলে চালের উপর আগুন দেখতে পায়। পরে ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে বের হতে পারলেও কোনা আসবাবপত্র রক্ষা করতে পারেননি। নগদ ১০ হাজার টাকাসহ তাদের প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কনুরা গ্রামের পোশাক দম্পতি লালন ফকির ও জান্নাতুল জানান, স্বামী-স্ত্রী দু’জনে গার্মেন্টসে চাকরি করি। কিস্তিতে ফ্রিজসহ টিভি কিনে নিয়ে আসেন। ফ্রিজের আরো পাঁচটি কিস্তি এখনো বাকি রয়েছে। অগ্নিকান্ডে তাদের নগদ ১০ হাজার টাকাসহ ঘরে থাকা মূল্যবান মালামাল সহ প্রায় চার লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

একই জেলার সদর উপজেলার বেতাড়ী গ্রামের রাহিম মিয়া ও শান্তা আক্তার জানান, মধ্য রাতে হঠাৎ ঘরের ফ্রিজের ওপর আগুন জ্বলতে দেখি। তখন স্বামীকে ডেকে ঘুমিয়ে থাকা ছোট ছেলেকে নিয়ে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। মুহুর্তের মধ্যে আগুণ প্রত্যেক ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এত তাদের নগদ ২০ হাজার টাকা ও মূল্যবান মালামালসহ ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

স্থানীয় এমএসসি পোশাক কারখানার শ্রমিক মুন্নি ও নাসির উদ্দিন, সিআরসি পোশাক কারখানার বিধান, প্রকাশদের ঘরেও সকল আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে তাদের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মুদি দোকান মালিক নাজমুল হাসান বলেন, রমজান উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দোকানে ৬০ বস্তা চাউল, ৩৫ বস্তা মুড়ি, ১৫০ কেজি খোলা সয়াবিন তৈল, ১ বস্তা চিনি, ১ বস্তা ছোলা, বিভিন্ন কেজির ৭০ বোতল সয়াবিন তৈল এবং নগদ ৫ লাখ টাকাসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

শ্রীপুরের মাওনা ফায়ার সার্ভিসের ইন্সপেক্টর আজাদ বলেন, খবর পেয়ে ৮ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে প্রায় আধা ঘন্টা চেষ্টা করে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে মুদি দোকানের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। তিনি জানান, আগুনে ওইসব বসতবাড়ী এবং মুদি দোকানসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মুমু

×