ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১

সিলেটে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল

৮৫ কোটি টাকার ভবন চালু হয়নি আজও

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস

প্রকাশিত: ০০:৩১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

৮৫ কোটি টাকার ভবন চালু হয়নি আজও

সিলেটে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ হলেও সেটা চালু করা যাচ্ছে না

পরিচালনা প্রতিষ্ঠান নিয়ে জটিলতার কারণে সিলেটে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ হলেও সেটা চালু করা যাচ্ছে না। ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাসপাতাল ভবনটি বুঝিয়ে দেওয়ার মতো কর্তৃপক্ষ পাচ্ছে না গণপূর্ত বিভাগ। সমন্বয়হীনতার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জেলা সিভিল সার্জন অফিসসহ কেউই এর দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছে না।

চিকিৎসাক্ষেত্রে সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নগরীর সদর হাসপাতালের পাশে প্রায় সাত একর ভূমির ওপর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে হাসপাতাল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়।  ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে সিলেট জেলার একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র হচ্ছে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সারা বিভাগ থেকে আগত রোগীরা এখানে  চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। ওসমানী হাসপাতালে রোগীর চাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানে সংশ্লিষ্টরা হিসশিম খাচ্ছেন। 
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওপর থেকে চাপ কমাতে এই হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।  বর্তমানে হাসপাতাল ভবন নির্মাণ শেষ হলেও সিভিল সার্জন কার্যালয় নাকি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তা পরিচালনা করবে, সেটি এখনো নির্ধারণ হয়নি। হাসপাতাল হস্তান্তরের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ না পাওয়ায় গণপূর্ত বিভাগ এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছে।

১৫ তলা হাসপাতাল ভবনে আটতলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ। রঙের কাজ, ইলেক্ট্রিক, টাইলস, গ্লাস, দরজা, জানালা লাগানোও সম্পন্ন। হাসপাতাল ভবনের বেজমেন্টে রয়েছে কার পার্কিং; প্রথম তলায় টিকিট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম; দ্বিতীয় তলায় আউটডোর, রিপোর্ট ডেলিভারি ও কনসালট্যান্ট চেম্বার; তৃতীয় তলায় ডায়াগনস্টিক; চতুর্থ তলায় কার্ডিয়াক ও জেনারেল ওটি, আইসিসিইউ, সিসিইউ; পঞ্চমতলায় গাইনি বিভাগ, অপথালমোলজি, অর্থোপেডিক্স ও ইএনটি বিভাগ এবং ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম তলায় ওয়ার্ড ও কেবিন। এর মধ্যে আইসিইউ বেড ১৯টি, সিসিইউ বেড ৯টি এবং ৪০টি কেবিন রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগ বলছে শুরু থেকেই তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও গণপূর্ত তা আমলে নেয়নি। ফলে শুরু থেকেই সমস্যা ছিল। তারা জানান, একজন তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করে হাসপাতালটি পরিচালনা বা তদারকির কথা ছিল। আমরা মন্ত্রণালয়কে সেভাবেই চিঠি দিয়েছিলাম।

কিন্তু এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব যখন মন্ত্রণালয়ে যায়, তখন গণপূর্ত বিভাগ আমাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করেনি। এখন তারা আমাদের বুঝিয়ে দিতে চাচ্ছে। আমাদের কাছে এত লোকবলও নেই যে আমরা এটা চালাতে পারব। তাই এ অবস্থায় আমরা হাসপাতালের দায়িত্ব নিতে পারি না।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন জেলা গণপূর্ত অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি জানান, আমাদের কাজ শেষ। এখন আর আমাদের দায়িত্ব নেই। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে দ্রুতই হস্তান্তর করব। গণপূর্ত বিভাগ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ নেয়নি বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেন।

সিভিল সার্জন অফিস জানায়, হাসপাতালের স্থাপত্য নকশা, কর্মপরিকল্পনা কোনোকিছুতেই সমন্বয় করা হয়নি সিভিল সার্জন অফিসকে। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দেবে সেটার আলোকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  বিষয়টি আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।

×