
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশের প্রাপ্য বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ৫০ বছর হলো ফারাক্কার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হয়নি। এরমধ্যে তিস্তা নদী অভিশপ্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ সেই তিস্তার পানির ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশ নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করে আমাদের সাথে অপ্রতিবেশীমুলক আচরণ করেছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের টানা ৪৮ ঘণ্টার ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচির সমাপনী জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিস্তা পাড়ে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে তিস্তা নদী রা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্য আসাদুল হাবীব দুলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে সোমবার থেকে উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী-লালমনিরহাট-রংপুর-কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে এই কর্মসূচি পালন করছে তিস্তাপাড়ের সর্বস্তরের মানুষ।
তারেক রহমান বলেন, প্রতিবেশী দেশ পানির ন্যায্য হিস্যা দেয় না, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সায় দেয় না, তাহলে আমাদেরকেই বাঁচার পথ খুঁজে নিতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সকল ফোরামে এই তিস্তার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।
পাশাপাশি তিস্তার সংযুক্ত নদীগুলোকে খনন করে পানি সংরণাগার ও জলাধার নির্মাণ করা হবে। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খাল কাটা প্রকল্প শুরু করা হবে। তিস্তা পাড়ের মানুষের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আন্দোলন সংগ্রাম বৃথা যাবে না। বিএনপি মতায় আসলে, তিস্তার সমাধান করা হবে। এজন্য বিএনপির প্রতি আপনাদের সমর্থন দরকার। তাই এখনকার শপথ ও শ্লোগান হলো ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও, জাগো বাহে দেশ বাঁচাও’।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার প্রধান, একটা খুনি এই দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই স্বৈরাচার প্রধান একসময় বলেছে, ভারতকে যা দিয়েছি, ভারত তা সারাজীবন মনে রাখবে। ভারত আওয়ামীলীগকে মনে রাখছে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে মনে রাখেনি। ভারত বাংলাদেশকে কিছু দেয়নি।
সারাবিশ্ব জুড়ে বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা সমাধান থাকে। সমস্যার নিরসন করে। এটাকে কূটনৈতিক নীতি বলে। অথচ ওই স্বৈরাচার সরকার ভারতকে খুশি রাখার জন্য নদী রা কমিশনকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিলো। তিস্তার চুক্তি না হলেও স্বৈরাচার সরকার সকল রীতিনীতি ভঙ্গ করে ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে গেছে। এখন সময় এসেছে, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে সাথে ইতিপূর্বে করা অন্যায্য, একতরফাসহ বিভিন্ন চুক্তি পুনরায় বিবেচনা করা দরকার।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোন হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে যেন স্বৈরাচার ও খুনির দল পুনর্বাসন না হয়। এজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে অতীতের মতন। গণতান্ত্রিক দলগুলোর থেকে জাতীয় নির্বাচনের কথা শুনলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ কেউ বিচলিত হয়ে ওঠেন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একেক উপদেষ্টা একেক সময়ের বক্তব্য খুনি ও মাফিয়া চক্রকে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুগম পথ করে যেনো না দেয়। এজন্য প্রতিটি গণতান্ত্রিক দল এই সরকারকে রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
আফরোজা