
রাজধানীর উত্তরায় রিক্সা থামিয়ে দুই পথচারীকে প্রকাশ্যে দা দিয়ে কোপানোর ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে আটটার দিকে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নং রোডে এই ঘটনা ঘটে।
এরই মধ্যে দা দিয়ে দুই পথচারীকে প্রকাশ্যে দা দিয়ে কোপানোর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
যেখানে দেখা যায়, সাদা ও জলপাই রংয়ের শার্ট পরিহিত দুই যুবক এক নারী ও এক পুরুষ পথচারীকে দেশীয় দা হাতে কোপাচ্ছে। কোপের শিকার ব্যক্তিরা হলেন মকবুল ও ইফতি। সম্পর্কে তারা স্বামী-স্ত্রী। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদেরকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির দায়িত্বশীল সদস্য হাসান মঈন জনকণ্ঠকে জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। দুজনকে আটক করা হয়েছে। এই হামলার পেছনে যারা জড়িত তাদেরকে শেকড় থেকে বের করে আনতে হবে।
তিনি জানান, কিশোর গ্যাং গ্রুপটির সদস্যরা সেক্টরের ভেতরে উচ্চশব্দে মোটরসাইকেলের হর্ণ বাজিয়ে যাচ্ছিল। এসময় রিক্সা থেকে মকবুল ও ইফতি প্রতিবাদ করায় ২০/২৫ জনের একটি কিশোর গ্যাং বাহিনীকে জড়ো করে তাদেরকে কোপানো হয়।
অন্যদিকে, কিশোর গ্যাংয়ের ওই গ্রুপটি টঙ্গী এলাকার বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। সন্ধ্যার পর পর উত্তরা ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্পটে সংঘবদ্ধভাবে ছিনতাইয়ে জড়িত চক্রের সদস্য বলে জানা গেছে।
এদিকে জনসম্মুখে দুই পথচারীকে দা দিয়ে কোপানোর ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষিপ্ত হয়ে দুই যুবক ওই স্বামী-স্ত্রী দম্পতিকে হাতে থাকা দা দিয়ে আঘাত করছে। এসময় জীবন বাঁচাতে ওই নারীকে হাত জোড় করে সন্ত্রাসীদের কাছে মাফ চাইতে দেখা গেছে। ঘটনার সময় পাশে থাকা একটি মোটরসাইকেলকেও দেখা গেছে। পরে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসীরা সেক্টরের বিভিন্ন রোড ধরে পালিয়ে গেলেও দুজনকে আটক করে স্থানীয়রা। এ সময় আটককৃতদের গণপিটুনি দিয়ে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয় জনতা।
এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান জানান, মোটরসাইকেলে উচ্চ শব্দ করে দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা একটি শিশুকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। এর প্রতিবাদ করলে পাশ দিয়ে আরেকটি মোটরসাইকেলে যাওয়া দম্পতি প্রতিবাদ করে। এরপর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাদের লোকবল ডেকে দম্পতির ওপর রামদা দিয়ে হামলা করে।
ওসি বলেন, এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- মো. মোবারক হোসেন (২৫) ও রবি রায় (২২)। গ্রেফতার মোবারকের বাড়ি শেরপুরের শ্রীবর্ধী থানায়। তিনি টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকায় ভাড়া থাকেন। আর রবি রায়ের বাড়ি টঙ্গী পশ্চিম থানার হাজীর মাজার এলাকায়।
এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান ওসি হাফিজুর রহমান।
তারেক/সাজিদ