ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি,হুমকিতে পরিবেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:১১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি,হুমকিতে পরিবেশ

মানিকগঞ্জ : উপজেলার দিঘুলিয়া ইউনিয়নের নাশুরপুর গ্রামে অবৈধভাবে তৈরি মাটির চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা

সাটুরিয়া উপজেলার দিঘুলিয়া ইউনিয়নের নাশুরপুর গ্রামে অবৈধভাবে তৈরি মাটির চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বনজ ও ফলদ গাছ কেটে এসব চুল্লিতে কাঠ সরবরাহ করা হয়। চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায়  একদিকে যেমন দূষিত হচ্ছে পরিবেশ অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে খেতের ফসল। ঝুঁকির মুখে জনস্বাস্থ্য।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের কোনো অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে অবৈধ এই কয়লা তৈরির কারখানা। ফসলি জমি নষ্ট করে এসব চুল্লি বসানো হয়েছে। বিশেষ উপায়ে তৈরি এই চুল্লিগুলোতে প্রতিদিনই কয়েকশ’ মণ করে কাঠ পোড়ানো হয়ে থাকে।
কারখানার কোনো অনুমোদন আছে কি না তা জানতে চাইলে কারখানার মালিক আবুল হোসেন বলেন, তার কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বা স্থানীয় প্রশাসনের কোনো অনুমতিপত্র নেই। তিনি তিন বছর ধরে এ ব্যবসা করেছেন বলেও জানান।
দিঘুলিয়া ইউনিয়নের চাচীতারা গ্রামের বাসিন্দা বাতেন মিয়া বলেন, চুল্লিতে কাঠ পোড়ানোর সময় চুল্লি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় চোখ জ্বালাপোড়া করে। এ ছাড়াও কালো ধোঁয়ার ফলে গাছপালা নষ্ট হচ্ছে।
উপজেলা বন কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, অবৈধ উপায়ে গাছ নিধন কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। তিনি আরও বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটিই অবৈধ। পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, কয়লা তৈরির এসব কারখানার কালো ধোঁয়ার ফলে ধানসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়াও এসব কয়লা কারখানায় ধোঁয়া নির্গমনের জন্য উঁচু চিমনি না থাকায় তা সরাসরি পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুন-উর-রশিদ বলেন, কয়লা তৈরির কারখানায় কাঠ পোড়ানোর সময় যে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয় এতে শিশু ও বয়স্কদের ফুসফুসের সংক্রমণজনিত নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, সাটুরিয়া উপজেলা প্রশাসন থেকে এ ধরনের কারখানার কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানার বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

×