ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

নির্বাচন নিয়ে যে দল ষড়যন্ত্র করবে জনগণ তাদের সমুচিত জবাব দিবে:মিন্টু 

স্টাফ রিপোর্টার 

প্রকাশিত: ১৯:৪০, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নির্বাচন নিয়ে যে দল ষড়যন্ত্র করবে জনগণ তাদের সমুচিত জবাব দিবে:মিন্টু 

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, সংস্কারের জন্য যৌক্তিক সময়ের কথা বলে দীর্ঘ সময় নেয়া ঠিক হবেনা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা চাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন এবং একটি অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। কোন ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। যে দল ষড়যন্ত্র করবে জনগণ তাদের সমুচিত জবাব দিবে।

 

সোমবার বিকালে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপির আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক ও জেলা সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক।

 

মিন্টু বলেন, আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। আমরা সরকারের কাছে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চাই। যৌক্তিক সময় বলে দীর্ঘ সময় নেওয়া ঠিক হবে না। সরকার কী করতে চায়, কতদিন সময় নিবে কী কী সংস্কার হবে এগুলো আমরা জানতে চেয়েছি। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, প্রতিটি প্রজন্ম তার আগের প্রজন্ম থেকে বেশি দূরদর্শী। ভবিষ্যতে নতুন নতুন সংস্কারের প্রয়োজন হবে। বেশি সংস্কার করে লাভ হবেনা। জনগণের নির্বাচিত সরকার দ্বারা পাশ করা না হলে সে সংস্কার টেকসই হবেনা। তাই কেবল অতীব জরুরি সংস্কার করে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে আমরা বলতে পারি আমাদের গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত সরকার আছে।

 

চাঁদপুর জেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, নিজেদের একতাবদ্ধ করার চেষ্টা করতে হবে। অতীতে কী হয়েছে তা ভুলে যেতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে জয়লাভ করাতে হবে।

 

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বিভক্তির মাধ্যমে সমাধান হবে না। যারা অন্যায় করেছে অবশ্যই তাদের বিচার হতে হবে। আইনকে নিজের হাতে তোলা যাবে না। এই সরকারকে জনগণের সরকার বলা যাবে। তবে গণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকার বলা যাবে না।বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরো বলেন, আওয়ামী লীগ অন্যায় করেছে, সন্ত্রাস করেছে, তাদের ব্যাপারে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা নেয়নি এটা দুঃখের বিষয়।

আওয়ামী লীগ যখনই দেশে সরকার গঠন করেছে, তখনই দেশকে দুর্বৃত্তায়ন এবং অপরাধের দিকে ধাবিত করেছে। আমরা চাই তাদের সবারই বিচার হোক। আওয়ামী লীগ ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না সেটা জনগণ বিচার করবে।

সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, বিএনপির চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় কোটা আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো স্বৈরাচারী পদ্ধতি থেকে আমাদের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রূপান্তরিত করবে। এজন্যই এই সরকার। এটাই দেশের ১৮ কোটি মানুষের চাওয়া।

 

তিনি বলেন, কেউ বলেন আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা চলতেই থাকবে। সংস্কার শেষ করে নির্বাচন হতে হবে এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না। অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করতে হবে। নির্বাচন শেষে কি সংস্কার বন্ধ হয়ে যাবে? আইনের যদি প্রয়োগ না থাকে তাহলে হাজার হাজার আইন করে কোনো লাভ নেই।

 

জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্যাহ সেলিমের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোঃ মোস্তাক মিয়া। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি লায়ন হারুনুর রশিদ, রাশেদা বেগম হীরা, এলডিপি নেতা আবু তাহের, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহবুব আনোয়ার বাবলু, জসিম উদ্দিন খান বাবুল, এম এ শুকুর পাটোয়ারী, দেওয়ান মোহাম্মদ শফিকুজ্জামান, যুগ্ম সম্পাদক সেলিমুছ সালাম, আক্তার হোসেন মাঝি, এডভোকেট জহির উদ্দিন বাবর, শাহজালাল মিশন, এডভোকেট হারুনুর রশিদ, এডভোকেট শামসুল ইসলাম মন্টু, এডভোকেট মনিরা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোশাররফ হোসাইন প্রমুখ।

 

জেলা বিএনপির প্রবীণ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাস্টার, শফিউদ্দিন আহমেদ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক, বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান শাহিন, মোতাহার হোসেন পাটোয়ারীসহ বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ও জেলা বিএনপি'র নেতৃবৃন্দ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।

 

জনদাবির ব্যানারে প্রথমবার অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচিতে এই প্রথম চাঁদপুরে মাঠে নেমেছে বিএনপি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও পতিত ফ্যাসিবাদের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দেশের ৬৪ জেলায় বিএনপি ঘোষিত আট দিনের সমাবেশ কর্মসূচির অংশ হিসাবে চাঁদপুর জেলা বিএনপি এই জনসভা আয়োজন করলেও নেতাকর্মী সমর্থক ও সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে এই জনসভা রূপ নেয় জনসমুদ্রে। ব্যাপক মিছিল স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে শহরের সকল রাজপথ এবং জনসভা স্থল।

আফরোজা

×