
পটুয়াখালীবাসীর স্বপ্নের রপ্তানিমুখী প্রকল্প ইপিজেডের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কাজ শেষে এখানে কর্মসংস্থান হবে প্রায় ২ লাখ মানুষের। প্রকল্পটি কেন্দ্র করে চাকরি, ঘরভাড়া, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ ঘুরে দাঁড়াবে উপকূলীয় মানুষের অর্থনীতির চাকা।
সম্প্রতি প্রকল্প নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না বলেন, আশা করছি পটুয়াখালী ইপিজেড আগামী বছরের শুরুতে অর্থাৎ ২০২৬ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্লট বরাদ্দ করবে, দৃশ্যমান হবে ইপিজেডের কাজ।
তথ্য মতে, ৪১৮ একর জমির মধ্যে ১৩০ একর জমিতে বালু ভরাট করা হয়েছে। এরপর জমিদাতা ১২৬ পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হবে আবাসন। যেখানে থাকবে পুকুর, মসজিদসহ নানা আধুনিক সুবিধা।
পর্যায়ক্রমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী উদ্যোক্তাদের মাঝে দেওয়া হবে প্লট বরাদ্দ। প্রকল্পের অধীনে তৈরি হচ্ছে ৩.১৫ লাখ মিটার রাস্তা, প্রায় ৩০ হাজার মিটার ড্রেনেজ, চারটি ছয়তলা কারখানা ভবন, তিনটি দশতলা অফিস ভবন, চারটি ছয়তলা এবং তিনটি দশতলা আবাসিক ভবন, জোন অফিস, কাস্টমস অফিস এবং নিরাপত্তা অফিস, একটি হেলিপ্যাড এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের জন্য ৫৪টি পুনর্বাসন ঘর নির্মাণ প্রকল্প।
এছাড়াও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১৪ ১১/০.৪১৫ কেভি সাবস্টেশন, ১৫ কিলোমিটার ১১ কেভি হাই-টেনশন লাইন এবং একটি ৩৩/১১ কেভি জিআইএস সাবস্টেশনও নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক (বাপজা) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে পুরো মাটি ভরাটের কাজ শেষ হবে। এখানে ১৫৪টি ফ্যামিলির জন্য ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ড্রেন, ফুটপাত, কালভার্ট, স্কুলসহ বিভিন্ন কাজ করা হবে। আশা করি আগামী এক বছরের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের মাঝে প্লট বরাদ্দ দিতে পারবো।
পটুয়াখালী ইপিজেডে ৩০৬টি শিল্প প্লট থাকবে। এটি ১,৪৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১০৫ কোটি টাকা আসবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আর ৩৩৮ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা)।
প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এখানকার মানুষের ভাগ্যবদল হবে। স্থানীয়দের ব্যাপক হারে কর্মসংস্থান বাড়বে। তৈরি হবে নতুন উদ্যোক্তা।
এ বিষয়ে স্থানীয় আবদুর রহিম বলেন, আমার ছেলেরা বেকার। এটি চালু হলে আশা করি তাদের কর্মসংস্থান হবে। ইপিজেডের প্লট পেতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিনিয়োগকারী তথা উদ্যোক্তারা আগ্রহ প্রকাশ করছেন। পাশাপাশি ব্যবসা করতে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার চাহিদার কথা বলছেন তারা।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পাচকোরালিয়া গ্রামে ৪১০.৭৮ একর জমিতে বিস্তৃত ইপিজেড প্রকল্পটি। এছাড়াও একই প্রকল্পের আওতায় কুয়াকাটায় ২.২৫ একর জমিতে একটি বিনিয়োগকারী ক্লাব স্থাপন করা হচ্ছে।
এনামুল/সজিব