![নাঙ্গলকোটে ১৩ কোটি টাকার টয়লেট নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নাঙ্গলকোটে ১৩ কোটি টাকার টয়লেট নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/image-636706-1674170345-1-2502150936.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত "মানব সম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্প"-এর মাধ্যমে ১৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে টয়লেট নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদাররা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে কাজ সম্পন্ন করছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ২২৯টি করে টয়লেট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি টয়লেটের জন্য ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট, টিন ও কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মিত রিং, স্ল্যাব ও পিলারগুলো সামান্য চাপেই ভেঙে যাচ্ছে। ফাটা রিংয়ের ওপর সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে তা ঢেকে দেওয়া হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, টয়লেট নির্মাণকাজ তড়িঘড়ি করে শেষ করা হচ্ছে। কোথাও প্রয়োজনীয় সিমেন্টের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়নি, আবার কোথাও টয়লেটের ভাঙা অংশ লুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া শ্রমিকদের খাবার ও নাস্তার জন্য উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
জোড্ডা পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, "টয়লেট নির্মাণের জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে কাজ হয়েছে নিম্নমানের। স্থানীয়দের কাছ থেকে অনেক অভিযোগ পেয়েছি।"
ঠিকাদারদের দাবি, ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থেকে ৫ হাজার টাকা ভ্যাট কেটে নেওয়া হয়। এরপর জেলা ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে হয়, ফলে প্রকৃত বরাদ্দ দাঁড়ায় ২৫ হাজার টাকা। এই বাজেটে মানসম্পন্ন টয়লেট নির্মাণ করা সম্ভব নয় বলে জানান ঠিকাদাররা।
নাঙ্গলকোট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কামাল হোসেন জানান, "নিম্নমানের কাজ হলে আমরা তা বন্ধ করে দেব। ২ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।"
কুমিল্লা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ বলেন, "৮ উপজেলায় প্রায় ১৭ হাজার টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
প্রকল্প পরিচালক তবিবুর রহমান জানান, "সারাদেশে টয়লেট নির্মাণকাজ চলছে, প্রতিটি জেলার প্রকৌশলী তা তদারকি করছেন। অনিয়ম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এ বিষয়ে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নেবে কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
আসিফ