বাগেরহাটে স্কুল পর্যায়ে প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রদর্শনী

সংস্কৃতিমনা জাতি গঠন ও শিক্ষার্থীদের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে স্কুল পর্যায়ে বাগেরহাটে প্রথমবারের মতো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, শপথ বাক্য পাঠ ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দিনব্যাপী সদর উপজেলার উদ্দিপন বদর সামছু বিদ্যা নিকেতনে প্রত্মতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের আয়োজনে এসব কর্মসূচি করা হয়।
শিক্ষার্থীরা বিদ্যা নিকেতনের সাংস্কৃতিক ল্যাবে প্রাচীন আমলের মাটির তৈজসপত্র, ইট, বালুর ঘড়ি, কলের গান, লাঙ্গল, ঢিকিসহ বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক নিদর্শন ঘুরে দেখেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিদর্শনের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মূল্য সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ব্যাখ্যা করেন। প্রদর্শনী শেষে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন শিক্ষার্থীদের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষার শপথ বাক্য পাঠ করান।

অনুষ্ঠানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. গোলাম ফেরদাউস, বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ, ফিল্ড অফিসার আইরিন পারভীন, সামছউদ্দিন নাহার ট্রাস্টের চিফ ফ্যাসিলিটেটর সুব্রত কুমার মুখার্জী উপস্থিত ছিলেন। পরে আলোচনা সভা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণ বিষয়ক আইন সম্পর্কে ভিডিওচিত্র প্রদর্শন ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সম্পর্কে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে উদ্দিপন বদর সামছু বিদ্যা নিকেতনের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ বলেন, আমরা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষার শপথ গ্রহণ করেছি। বাগেরহাট শহরের গোড়াপত্তন খানজাহান আলীর (রহ) নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনাসহ নানা প্রাচীন বিষয়ে জানতে পেরেছি। আমরা খুব খুশি।
ফারজানা আফরিন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শন দেখেছি। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আমাদের প্রাচীন স্থাপনা সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। মসজিদের শহর বাগেরহাট, ষাটগম্বুজ মসজিদ ও প্রাচীন স্থাপনা সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়েছি। এর মাধ্যমে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে।
উদ্দিপন বদর সামছু বিদ্যা নিকেতনের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নুশরাত ইয়াসমিন বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানেই প্রথম সামাজিক বিজ্ঞান ল্যাব করা হয়েছে। সামাজিক বিজ্ঞান সংগ্রহশালা একটি জাতির অতীত ইতিহাস জানতে সহযোগিতা করে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের এই প্রদর্শনী শিক্ষার্থীদের আরও সমৃদ্ধ করবে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন বলেন, প্রথমবারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা শিক্ষার্থীদের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলে জানান প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।