ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

১৮ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন

যমুনা রেল সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ও নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৩:১৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যমুনা রেল সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু

যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে বুধবার রেল চলাচল শুরু হয়েছে

দীর্ঘ অপেক্ষার পর পরীক্ষামুলক ট্রেন চলাচল শেষে ওপর দিয়ে শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। এতে উদ্বোধনের আগেই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলো। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্ক সিটি ট্রেনটি বুধবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে যমুনা রেলওয়ে সেতু পশ্চিমপাড় অতিক্রম করে ঢাকার উদ্দ্যেশে ছেড়ে যায়।

অপরদিকে বুড়িমারি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে এসে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে সেতুর পূর্বপাড় অতিক্রম করে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি রেল সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে বলে প্রকল্প সূত্র জানিয়েছেন।
যমুনা রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান  বলেন, বুধবার সকাল থেকে নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে নতুন এ রেল সেতু দিয়ে। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রথম পাড়ি দিয়েছে এ সেতু দিয়ে। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা রেলসেতুতে দুটি লাইন থাকলেও আপাতত প্রথমে একটি লাইন দিয়েই উভয়দিকে ট্রেন চলাচল করবে।

পর্যায়ক্রমে সিডিউল অনুযায়ী বাকি ট্রেনগুলো চলবে। তবে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। যোগাযোগ উপদেষ্টাসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই অনুষ্ঠানে থাকবেন। ওই দিন থেকে দুই লাইনে ট্রেন চলাচল করবে। যমুনা সেতু দিয়ে আর ট্রেন চলাচল করবে না। 
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা রেলসেতুতে দুটি লাইন থাকলেও প্রথমে একটি লাইন দিয়েই উভয় দিকে ট্রেন চলাচল করবে। আজ ঢাকা থেকে যেতে ডান পাশের লাইন, অর্থাৎ সেতুর উত্তর পাশের লাইনটি দিয়ে ট্রেন চলবে। আপাতত একটি লাইনে উভয়দিকে ট্রেন চলবে।১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়।

তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হয়। এ সমস্যার জন্য ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে সরকার।

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুরটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি-জাইকা। দেশের বৃহত্তর এ রেল সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেল সেতু ব্যবহারের জন্য ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের শুরুতে এই সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালনের পর গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর নাম পরিবর্তন করে যমুনা রেল সেতু রাখা হয়।

×