ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

বিমানবন্দরে লাগেজ না পেলে কিংবা হারিয়ে গেলে কিভাবে ফেরত পাবেন?

প্রকাশিত: ০১:২৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০১:২৯, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিমানবন্দরে লাগেজ না পেলে কিংবা হারিয়ে গেলে কিভাবে ফেরত পাবেন?

ছবি : জনকণ্ঠ

আমি এই মুহূর্তে রয়েছি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। আপনারা যারা বিদেশ থেকে আসার পর, লাগেজ বেল্টে যখন আপনার লাগেজটি না পান, কিংবা আপনার লাগেজটি যদি ছেঁড়া, ফাটা, ভাঙ্গা কিংবা না পান, তাহলে কোথায় অভিযোগ দিবেন শাহজালাল বিমানবন্দরে? কিভাবে আপনার লাগেজটি, আপনি শাহজালাল বিমানবন্দরে হারিয়ে গেলে কিংবা ভেঙে গেলে, কিভাবে আপনার ক্ষতিপূরণটি আপনি বুঝে পাবেন?

আমি এখন আছি কাউন্টারে, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, সেটি হচ্ছে ‘লস্ট এন্ড ফাউন্ড কমপ্লেন ডেক্স’ বা ‘হারানো বা অনুসন্ধান অভিযোগ ডেক্স’। এখানে আপনি আপনার অভিযোগটি দিবেন। আপনার হারানো কিংবা ভেঙে যাওয়া কিংবা আপনার লাগেজ বুঝে না পাওয়া সবকিছুই কিন্তু এখানে আপনাকে অভিযোগ দিতে হবে। এরপরেই আপনার লাগেজটি আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

২১ দিনের মধ্যে যদি আপনি আপনার লাগেজটি না পান, তাহলে অবশ্যই আপনি ক্ষতিপূরণের জন্য অভিযোগ করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার লাগেজের ভিতরে এত টাকার সামগ্রী ছিল, আরো একটি বিষয় জানিয়ে রাখতে চাই, প্রতি কেজির জন্য আপনার ২০ ডলার করে আপনি ক্ষতিপূরণ পাবেন।

আপনার লাগেজের ওয়েট যদি ৪০ কেজি হয়ে থাকে, তাহলে সেই হিসাব অনুযায়ী, পার কেজি ২০ ডলার পর্যন্ত আপনি ক্ষতিপূরণ হিসাবে পাবেন। তবে চলুন, কিভাবে অভিযোগ করবেন, কোথায় অভিযোগ দিবেন শাহজালাল বিমানবন্দরে সেটি একটু জেনে আসি।

এটি হচ্ছে শাহজালাল বিমানবন্দরের ‘লস্ট এন্ড ফাউন্ড কমপ্লেন ডেক্স’। আমরা সেই ডেক্সেই এখন যাচ্ছি এবং এখানে আপনি আপনার অভিযোগটি দিবেন। এখানে সার্বক্ষণিক একজন কর্মকর্তা থাকে এবং তারাই কিন্তু আপনাদের অভিযোগটি নিয়ে থাকবে।

আপনার কাছে একটা বিষয় জানতে চাই, সেটি হচ্ছে যারা শাহজালাল বিমানবন্দরে তাদের লাগেজটি খুঁজে না পাবে, প্রথমেই তো লস্ট এন্ড ফাউন্ডে এসে আপনার কাছেই অভিযোগ জানাবেন। আপনি একটু আমাদেরকে জানান, সে অভিযোগ দেওয়ার প্রসিডিউরটা কি, কিভাবে অভিযোগ জানাবেন?

জবাবে তিনি বলেন, আচ্ছা, প্রথমে যখন উনারা ল্যান্ড করবে, ব্যাগ বেল্টে দেখবে, দেখার পর যদি না পায়, ওইখানে প্রত্যেক এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি থাকে, ওইখানে বেল্টের মধ্যে, উনাদের সাথে কথা বলে, উনারা এখানে অর্থরাইজ করে, এখানে দিবে। তারপর আমরা এখান থেকে কমপ্লেনটা করবো।

দেন এখানে যে প্রসিডিউরটা আছে, তখন আমরা এখান থেকে প্রসিডিউর করে, সিস্টেমে ওয়ার্ল্ড রেসে দিয়ে দিব, আমরা সিস্টেমে ওই গুলা, যে ব্যাগের সবকিছু আর ডিটেইলস।

জানতে চাওয়া হয়, তারপরে তিনি, তার মানে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় অভিযোগ দিতে?

এখানে হইছে ক্লেইম ট্যাগটা লাগবে, এখানে পাসপোর্ট লাগবে, বোর্ডিং কার্ড লাগবে আর দুইটা ফোন নাম্বার লাগবে, এড্রেস লাগবে।

লাগেজটি পাওয়ার পরে কি করেন, যাত্রীকে এসে নিতে হয়, নাকি আপনারা তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেন?

এইটা দুই ধরনের আছে। এখন এখানে হোম ডেলিভারিও দেওয়া হয়। আর হলো যেখানে কাস্টমসের জিনিস আছে, অনেক কিছু, ধরেন, কাস্টমস যেগুলো রাজস্ব আছে, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স দেয়। এগুলা এখান থেকে এসে নিয়ে যেতে হয়।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে হচ্ছে, আপনার যখন, আমরা তো বাংলাদেশ বিমান হচ্ছে, এখানে হ্যান্ডেলিং হিসেবে কাজ করি হ্যান্ডেলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করি। আমাদের বিমানের ক্ষেত্রে, আমরা একটা আলাদা, মানে আমরা এটা আলাদাভাবে সম্পূর্ণভাবে চেক করে, যদি দেখি যে, ব্যাগেজ না আসছে। সেই ক্ষেত্রে হচ্ছে, আমরা আগে আমাদের ডোমেস্টিক সাইট, আমাদের ব্যাগের সাইট, এই সাইটগুলো আগে আমরা চেক করে দেখি যে, আমাদের কাছে ভুলক্রমে কোনভাবে ব্যাগটা অন্য কোথাও রয়ে গেল কিনা।

যদি সেটা থাকে, তাহলে আমরা প্যাসেঞ্জারের কাছে সেটা যত দ্রুত সম্ভব হ্যান্ডওভার করে দেই। আর যদি না আসে, দেখা যায় অনেক সময় কোন ব্যাগের মেসেজ থাকে, আমাদের আউট স্টেশন থেকে যে এই ব্যাগটা আসছে না, সেই ক্ষেত্রে হচ্ছে আমরা ওনার কাছ থেকে একটা কমপ্লেইন নেই। এবং কমপ্লেইনের জন্য এই প্যাসেঞ্জারের বোর্ডিং পাস, পাসপোর্ট এবং হচ্ছে উনার ব্যাগের সাথে যে থাকা যে টোকেন, সেই টোকেন নাম্বারটা মূলত হচ্ছে আমাদের এখানে দরকার হয়।

ওই টোকেন নাম্বারের উপরে ভিত্তি করে হচ্ছে, আমরা একটা কমপ্লেইন নেই। কমপ্লেনকে আমরা আমাদের ভাষায় বলি হচ্ছে পিআইআর। এই পিআইআর টার জন্য আমরা একটা কপি অফিশিয়াল কপি হিসেবে রেখে দিই। আর আরেকটা কপি হচ্ছে আমরা প্যাসেঞ্জারকে দিয়ে দেই, যেখানে তার ওই কমপ্লেইনের যাবতীয় তথ্য এবং আমাদের সাথে যোগাযোগের নাম্বারটা দেওয়া থাকে।

পরবর্তীতে ব্যাগেজ আসলে, আমরা সেই ব্যাগেজগুলো হয়তোবা, প্যাসেঞ্জার যদি তার হোম ডেলিভারি চায়, সেক্ষেত্রে আমরা হোম ডেলিভারি দেই, আর যদি সে নিজে এসে নিয়ে যেতে চায়, সেটা আমরা নিজে সে আসলে আমরা, আমাদের এই রুম থেকে আমরা একটা পাশ বই ইস্যু করে দেই, সেই পাশ নিয়ে তিনি ভেতরে গিয়ে, উনার ব্যাগটা আমাদের স্টোর থেকে কালেক্ট করে নেন।

সেক্ষেত্রে কি কোন টাকা পয়সার কোন প্রয়োজন আছে?

জবাবে বলেন, না, না। হোম ডেলিভারির ক্ষেত্রে কোন রকম কোন টাকা পয়সার দরকার হয় না। কেননা হচ্ছে একজন প্যাসেঞ্জার কিন্তু তার ব্যাগ যখন তিনি চেকিং এ দিচ্ছেন, তার পাওয়ার অধিকারটা কিন্তু আগে। তো সেই ক্ষেত্রে হচ্ছে যে, উনি আসার পরে যখন ব্যাগটা পাচ্ছে না, সেটার দায়ভারটা পুরোপুরি যে বিমানে উনি আসছেন, সেই বিমানের উপরে বর্তায়।

সেটা কতদিনের মধ্যে আপনারা ব্যাগটা হস্তান্তর করছেন?

তিনি বলেন, আমরা হচ্ছি চেষ্টা করি, প্রথমে হচ্ছে আমাদের প্রথম ধাপ থাকে ৭২ ঘন্টা। ৭২ ঘন্টা, হ্যাঁ ৭২ ঘন্টার মধ্যে যদি আমরা না পারি, সেই ক্ষেত্রে আমরা আরো কিছু সময় নিয়ে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী হচ্ছে ২১ দিন পর্যন্ত আমরা একটা সময় নিতে পারি। ২১ দিন পরে গিয়ে একজন প্যাসেঞ্জার তার ব্যাগের জন্য তিনি আর্থিক ক্ষতিপূরণের জন্য দাবি করতে পারবেন। আর কি

সেটা হচ্ছে এয়ারলাইন্স এর কাছে দাবি করবে?

জবাবে বলেন, হ্যাঁ, এয়ারলাইন্স এর কাছে দাবি করবে। যদি বাংলাদেশ বিমান হয় বাংলাদেশ বিমানের কাছে দাবি করবে। যদি অন্য এয়ারলাইন্স হয়, তাহলে সেই সরাসরি এয়ারলাইন্সের অফিসে গিয়ে, তাকে এটা কমপ্লেনটা করতে হবে।

এর মধ্যে যদি আপনারা তাকে লাগেজটি বুঝিয়ে না দিতে পারেন, তাহলে তো আপনাদের কোন দায়ভার কি এটার মধ্যে আছে, নাকি তখন এটা এয়ারলাইন্সের কাছে চলে যাবে?

জবাবে বলেন, এয়ারলাইন্সের কাছে চলে যাবে। তখন আপনাদের যে বলে দেবেন যে, আপনারা এটা আপনাদের কাছে, কোন

যেমন আমার বাংলাদেশ বিমানে যদি আসে, বাংলাদেশ বিমানের ক্ষেত্রে কিন্তু সেটা আমার কাছেই আসবে। তো সেই ক্ষেত্রে হচ্ছে আমরা আরো কিছু ডকুমেন্টস তাকে আনতে বলি, এবং সেই ডকুমেন্টস এর উপরে ভিত্তি করে আমাদের বিমানের একটা আপনার তদন্ত কমিটি আছে, উপরের লেভেলের বলা এলাকাতে।

তারা এগুলো যাচাই বাছাই করে এরপরে প্যাসেঞ্জারকে এটা কতটুকু দেওয়া যায় বা কতটুকু ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়, সেই ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নেয়। আর আনুষঙ্গিক তার হচ্ছে আমরা কমপ্লেনটা যখন নেই, তখন তার নামের উপরে একটা হচ্ছে এমআরসিপি চেক বই আমরা একটা কপি নিয়ে থাকি, যেটাতে তার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বারটা লিখা থাকে, যাতে ওই নম্বরে তার টাকাটা বিমান দিয়ে দিতে পারে।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=Iv0xKXUAf94

মো. মহিউদ্দিন

×