![যারা শয়তান, তারাই ‘ডেভিল হান্টে’ ধরা পড়বে যারা শয়তান, তারাই ‘ডেভিল হান্টে’ ধরা পড়বে](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/b3-2502101837.jpg)
রাজশাহীতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ নির্দোষ কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, চলমান এই অভিযানে যারা শয়তান, তারাই ধরা পড়বে। এখানে ছোট কি বড় শয়তান সেটা বিষয় নয়।
সোমবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, ‘ডেভিল হান্ট অপারেশন ততদিন পর্যন্ত চলবে, যতদিন দেশ ডেভিল মুক্ত না হয়।’ বড় শয়তান ধরা পড়ছে নাÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ডেভিল হান্ট ডিক্লেয়ার করার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদেরও আমরা ছাড় দিইনি। প্রথম দিনই পাঁচজনকে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। সুতরাং ছোট-বড় ব্যাপার নয়। যে আসবে এই জালে, সে ধরা পড়বে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ের যারা ভুক্তভোগী, তারা অবশ্যই আইনগত সহায়তা পাবেন। শুধু আমাদের এখান থেকে নয়। লিগ্যাল এইড ডিপার্টমেন্ট আছে, ওই দিক থেকেও সহায়তা পাবেন। চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা চাকরি ফিরে পাবেন কি না, জানতে চাইলে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, কেউ যদি দোষী হয়ে চাকরি হারায় তারে কি ফেরানো উচিত? আপনারা যদি না বলেন, তা হলে আমিও না বলব। যদি নির্দোষ হয়ে থাকে, সেটা তো আদালতের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্দোষ ব্যক্তি কোনো অবস্থায় যেন শাস্তি না পায়, সে জন্য যত ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। যারা মিথ্যা কেস করেছে, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনের ভেতরে থেকে যতটা সম্ভব তাদের জন্য করবেন।
সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ যে ভূমিকায় ছিল তাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এতে আমরা খুশি। তবে আইন যেন কেউ হাতে তুলে না নেয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশ নিয়ে গুজবের বিরুদ্ধে ‘সোচ্চার’ অবস্থান নেওয়ায় সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তারা (ভারতীয় সংবাদমাধ্যম) মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছে। ওটার বিরুদ্ধে আপনারা (বাংলাদেশী সাংবাদিকরা) খুবই সোচ্চার। আপনারা সত্য সংবাদটা প্রকাশ করেছেন যেন মিথ্যা সংবাদটা প্রকাশ না হয়। সে জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। সত্যি সংবাদ প্রকাশ করার কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ আর আগের মতো গুজব ছড়ায় না।
গরু আনতে গিয়ে বাংলাদেশী নাগরিকদের প্রাণহানির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের লোকদের একটু সচেতন করতে হবে। হরিয়ানা থেকে গরুটা কিন্তু হেঁটে হেঁটে আসে না। তাদেরই (ভারতীয়) চোরাকারবারিরা নিয়ে আসছে, কিন্তু তারা বর্ডারটা ক্রস করে না। আমাদের এরা ওদিকে যাচ্ছে। আমাদের মনে হয় গরু চোরাচালানি কমে যাবে, কারণ খামারিরা উৎপাদন বাড়িয়েছেন। হয়তো একটা সময় আসবে আমাদের ওইদিকের গরু প্রয়োজনই হবে না।
রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির শঙ্কা নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘রমজানের ভেতর কিন্তু দুইটা দিক আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। রমজানটা কিন্তু মুসলমানদেরই। অন্যান্য ধর্মে দেখবেন, যখন তাদের উৎসব থাকে তারা জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেয়। আমাদের সময় কিন্তু রমজানের সময় দাম বাড়িয়ে দেয়। দাম বাড়ানোটা তারা সওয়াব হিসেবে নেয় কি না আমি তা জানি না।
তিনি বলেন, ‘দাম বাড়ানোটা কিন্তু সওয়াব না। এই যে তারা (ব্যবসায়ীরা) মানুষের ভোগান্তি করছে, এ জন্য শুধু জনগণের কাছে না, এ জন্য তারা ওপরওয়ালার কাছেও দায়ী থাকবেন। উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আশা করছি, এবার জিনিসপত্রের দাম সহনীয় থাকবে, যেহেতু আমাদের ডাল, ছোলার আমদানি পর্যাপ্ত। খেজুরসহ অন্য জিনিসপত্রেরও সরবরাহ খুবই ভালো।’
দেশে সারের কোনো সংকট নেই বলেও জানান কৃষি উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কোনো জায়গায় সারের সংকট দেখাতে পারবেন না। কোনো জায়গায় যদি সংকট হয়, ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন। ব্যবস্থা হবে। এখন কিছু কিছু ডিলার শয়তানি করছে। দামও হয়তো একটু বেশি নিচ্ছে। এদের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় আইজিপি বাহারুল আলম, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারসহ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের ব্রিফ করার আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।