.
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষে অধিক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল সাপাহার। দিন দিন এ অঞ্চলে আমের উৎপাদন বেড়েই চলেছে। চলতি মৌসুমে নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্নের আমের মুকুল। আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ততা বেড়েছে আমচাষিদের। দেশের মোট উৎপাদিত আমের ৬০ শতাংশ আম এ জেলায় উৎপাদিত হয়। এই আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে। আমের মিষ্টতা আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে থাকায় আমের রাজধানী হিসেবে সুপরিচিত এই অঞ্চল।
সরেজমিনে সাপাহার সদর ইউনিয়নসহ তিলনা, শিরন্টি ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকার আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে অধিকাংশ গাছে উঁকি দিতে শুরু করেছে আমের মুকুল। কিছু কিছু বাসা-বাড়ির গাছেও দেখা গেছে মুকুল। আম মৌসুমি অর্থকরী ফল হিসেবে গুরুত্ব পেলেও বর্তমানে এটি শিল্পজাত পণ্য হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক অবস্থান এবং আম চাষের উপযোগী আবহাওয়ার কারণে এ অঞ্চলে বেড়েছে আমের উৎপাদন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও আম রপ্তানি হচ্ছে।
সাপাহার সদর ইউনিয়নের আমচাষি আশরাফুল হক জানান, এ বছর ১৫০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করছেন তিনি। অধিকাংশ বাগানে আমের মুকুল দেখা দিয়েছে। মুকুল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো উৎপাদনের আশা করছেন তিনি।
উপজেলার পিছল ডাঙ্গা গ্রামের আমচাষি মমিনুল হক বলেন, এবার তুলনামূলকভাবে কীটনাশক কম ব্যবহার হচ্ছে। সাপাহার উপজেলার কৃষি দপ্তরের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি বলেন, চলতি বছর উপজেলায় ৯ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এখন আমের মুকুল শুরুর সময় প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি ইমিডাক্লোপ্রিড এবং ২ গ্রাম কার্বেনডাজিম ছত্রাকনাশক প্রয়োজনানুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে। সকল বাগান ও আমগাছে সম্পূর্ণ মুকুল আসতে আরও ১৫-২০ দিন সময় লাগতে পারে বলে কৃষিবিদ ও আমচাষিরা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম আহমেদ বলেন, নওগাঁর সাপাহার থেকে আম রপ্তানির পথ সুগম করতে এ অঞ্চলে প্যাকিং হাউস তৈরির বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আমচাষিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে এবং এলাকায় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।