ছবি: সংগৃহীত।
সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী দাবি করেছেন যে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে মার্কিন ইন্ধন রয়েছে। তিনি বলেন, "বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা বিপ্লব হোক বা অভ্যুত্থান, এর পেছনে গ্লোবাল পলিটিক্সের বড় ভূমিকা রয়েছে।"
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, "আমেরিকা এখন আর পরাশক্তি নয়। তার পতন অনেক আগেই শুরু হয়েছে। বিশ্ব রাজনীতি থেকে সে বিতাড়িত, পরাজিত, এবং ইউরোপেও সুবিধা করতে পারছে না। ফলে অস্ত্র ব্যবসা ধরে রাখতে ও নিজস্ব প্রভাব বজায় রাখতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে রাজনৈতিক ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।"
তিনি আরও বলেন, "চীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্যে প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। আমেরিকা সেই প্রভাব কমানোর জন্য বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে চাইছে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এটি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।"
ড. আব্বাসীর মতে, "আমেরিকা ইতোমধ্যে তার পছন্দের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে, যা মার্কিন ইন্ধনে পরিচালিত হচ্ছে। এই সরকারে যারা আছেন, তারা কেউ দেশপ্রেমিক নন, ভালো রাজনীতিবিদও নন এবং দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।"
তিনি আরও বলেন, "এটি মূলত আমেরিকার পরিকল্পনার অংশ, যেখানে প্রথম ধাপে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বসানো হয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে মার্শাল ল’ জারি করার চেষ্টা চলছে, এবং তৃতীয় ধাপে দেশে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি করে বড় ধরনের গণহত্যা ঘটানোর পরিকল্পনা রয়েছে।"
তিনি অভিযোগ করে বলেন, "আমি বহুবার এ বিষয়ে সতর্ক করলেও কেউ তা গুরুত্ব দিচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ এই পরিস্থিতি ঠেকানোর চেষ্টা করছে না। একদল নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, আরেক দল মাঠ গোছানোর কাজে ব্যস্ত। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কারও দৃষ্টি নেই, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।"
ড. আব্বাসী বলেন, "যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করছে, তাদের মন্তব্যগুলোর দিকে তাকালে অবাক হতে হয়। এমনকি দেশপ্রেমিক বলে পরিচিত অনেকেও যৌক্তিক সমালোচনা মেনে নিচ্ছে না। তাদের দৃষ্টিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যাবে না। অথচ যদি সরকারের ভুলত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হতো, তাহলে দেশ আজকের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতো না।"
তিনি আরও বলেন, "বর্তমান সরকার ও তার সমর্থকরা বিপ্লব-পরবর্তী অবস্থায় নিজেদের চূড়ান্ত কর্তৃত্বশালী মনে করছে। অথচ তাদের বাংলাদেশের ইতিহাস, নৃতত্ত্ব, ভূগোল ও সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। মূলধারার রাজনীতিবিদদের পরামর্শ না নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল বড় ভুল।"
সায়মা ইসলাম