ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১

ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

৫ বছরেও চালু হয়নি কালকিনি বাস টার্মিনাল 

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালকিনি, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ১২:০৩, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১২:৪২, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

৫ বছরেও চালু হয়নি কালকিনি বাস টার্মিনাল 

ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও ৫ বছরেও চালু হয়নি। ফলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কেই পরিবহনের যাত্রী ওঠা-নামা করায় বাড়ছে ঝুঁকি। এদিকে বাস টার্মিনালটি চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ যাত্রী, চালক ও স্থানীয় এলাকাবাসী। অপরদিকে সব জটিলতা কাটিয়ে শিগগিরই পৌর বাস টার্মিনাল চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন। আজ শনিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। 

পৌরসভা সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের মে মাসে কালকিনিতে ১ একর ৩০ শতাংশ জমির উপরে পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ। পরের বছরের ডিসেম্বরে কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা চূড়ান্ত বিল তুলে নেয় মিজান এন্টার প্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নবনির্মিত বাস টার্মিনালটি চালু না হওয়ায় মাদক সেবী আর বখাটেদের আড্ডাখানায় পরিনত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কালকিনির ভুরঘাটার এলাকার বড় একটি অংশ দখল করে রেখেছে তিন চাকার যান। মজিদবাড়ি মৌজার ভুরঘাটা পৌর বাস টার্মিনাল চালু না হওয়ায় মহাসড়কেই যাত্রী ওঠা-নামা করায় বাড়ছে ঝুঁকি। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুন। যাত্রীদের সুবিধার্থে ভুরঘাটায় পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও ৫ বছরেও হয়নি উদ্বোধন। ফলে কোন সুবিধাই পাচ্ছেন না যাত্রী, চালক ও এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা কালাচান, আব্দুল আজিজ বলেন, ‘পৌর বাস টার্মিনাল চালু না হওয়ায় এখানে বখাটের আড্ডা চলে নিয়মিত। কেউ কেউ মাদক সেবনের নিরাপদ জায়গা হিসেবে পছন্দ করেছে। এতে যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। তাই বাস টার্মিনালটি জরুরিভিত্তিতে চালু করা দরকার।’

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী বাসের যাত্রী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘প্রায়ই ভুরঘাটা এলাকায় যানজট লেগে থাকে। এর অন্যতম কারণ হলে মহাসড়কেই উপরে দাঁড়িয়েই যাত্রীদের বাসে উঠতে হয় ও নামতে হয়। এতে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঘটতে পারে। অথচ যাত্রীদের সুবিধার্থে পৌর টার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও কোন কাজেই আসছে না। আমরা এটি দ্রুত চালু চাই।’

সুগন্ধা বাসের চালক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘বাস টার্মিনালটি চালু হলে যাত্রী ও চালক সবারই উপকার হবে। তাহলে মহাসড়কের উপরেই যাত্রীদের উঠানামা করা লাগবে না। স্বাচ্ছন্দ্যে সবাই পরিবহনের উঠতে ও নামতে পারবে।’

কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ বলেন, খুব শিগগিরই পৌর বাস টার্মিনাল চালু করা হবে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহ্ মোহাম্মদ সজীব বলেন, ‘কালকিনি পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ করার সময় পরিকল্পনার অভাব ছিল। সেখানে কাউন্ডার প্রয়োজন অন্তত ৩০টি, কিন্তু নির্মানের সময় বাস কাউন্টার তৈরী করেছে মাত্র ৭টি। বিপুল সংখ্যক কাউন্টার না থাকায় এটি চালু করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে বাস টার্মিনালটি শিগগিরই চালুর লক্ষ্যে কালকিনি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে  উপজেলা ও জেলা প্রশাসন।’

উল্লেখ্য তৎকালীন মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে এই বাস টার্মিনালটি নির্মান করা হয়।

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

×