ছবি:দৈনিক জনকণ্ঠ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর প্রতিটি রুমে সাধারণত ৪ জন শিক্ষার্থী থাকার নিয়ম হলেও, এবার কাজী নজরুল ইসলাম হল প্রশাসন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ১২ জন শিক্ষার্থী রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হলের তিনটি রুমে ১২ জন করে শিক্ষার্থী ওঠানোর জন্য ইতোমধ্যে তালা দেওয়া হয়েছে।
যদিও একদল শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দিয়েছে, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অংশ সংশ্লিষ্টদের মাঝে এই বিষয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, যদি এই নিয়ম কার্যকর হয়, তাহলে গণরুম সংস্কৃতি আবার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং র্যাগিংয়ের নতুন ধারার সৃষ্টি হতে পারে।
জানা গেছে, ১২ সেপ্টেম্বর গণরুম প্রথা বিলুপ্ত ও র্যাগিং সংস্কৃতি বন্ধের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে গত ১ ফেব্রুয়ারি নজরুল হলের প্রাধ্যক্ষ মো. হারুনের উপস্থিতিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী নবীনদের জন্য রুম বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেন।
পাটাতন বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠনের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, "এটি গণরুমের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির দিকে পরিচালিত করবে। এক রুমে ১২ জনকে গাদাগাদি করে থাকার পরিবেশ সৃষ্টি হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, ১০-১২ জন শিক্ষার্থী এক রুমে থাকলে এটি গণরুম হিসেবে বিবেচিত হবে, যা পুরনো সময়ের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং র্যাগিংয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে।
এদিকে, কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট মো. হারুন বলেন, “এটি আমাদের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত। শিক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এবং এক রুমে ১২ জন শিক্ষার্থী থাকতে পারবে।”
বিজয় ২৪ হলের প্রভোস্ট ড. মাহমুদুল হাসান খান জানিয়েছেন, ১৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য সিট বরাদ্দের জন্য তিনি কাজ করছেন। তিনি বলেন, “গণরুম চালুর কোনো পরিকল্পনা নেই, ১২ জন শিক্ষার্থী এক রুমে থাকলেও র্যাগিং হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
এদিকে, নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণী হলের প্রভোস্ট ড. সুমাইয়া আফরিন সানি বলেন, “গণরুম প্রথা আর নেই। তবে ১৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সিট দেওয়া হচ্ছে, যেখানে ১০-১২ জন শিক্ষার্থী থাকতে হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান প্রশাসন র্যাগিং বা লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক।”
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য ড. মাসুদা কামাল মন্তব্য করতে রাজি হননি, এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
রেজা