ছবিঃ : দৈনিক জনকণ্ঠ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এক ব্যক্তি স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রথম স্ত্রী তার স্বামীর বিশেষ অঙ্গ ও হাত-পায়ের রগ কেটে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে, আর মায়ের কঠোর শাস্তি চেয়েছে তারই মেয়ে।
জানা গেছে, কুশলা ইউনিয়নের বিরামের কান্দি গ্রামের মনজেল সরদারের ছেলে রুবেল সরদার (৩৫) ১২ বছর আগে একই গ্রামের আমীর আলীর মেয়ে রেশমা বেগমকে বিয়ে করেন। তবে কয়েক বছর পার না হতেই রেশমার উচ্চাভিলাষী জীবনযাপনের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এ দম্পতির ঘরে রুকাইয়া ইসলাম ও আরাফাত সরদার নামে দুই সন্তান রয়েছে, যারা বর্তমানে যথাক্রমে পঞ্চম ও প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
সম্প্রতি স্ত্রীর দুর্ব্যবহার সহ্য করতে না পেরে রুবেল দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর রেশমা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ঘটনার জেরে সামাজিক সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়। সালিশের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে রুবেল ও রেশমা পুনরায় সংসার শুরু করলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ক্ষোভ থেকেই যায়।
গত সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে রুবেলের শোবার ঘরে ঢুকে স্ত্রী রেশমা বেগম ও তার আত্মীয়স্বজন মিলে তার বিশেষ অঙ্গ ও হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। রুবেলের চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে রেশমা ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রুবেলের বাবা মনজেল সরদার বাদী হয়ে রেশমা বেগম ও তার দুই ভাই নিজাম শেখ, মতিউর শেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে কোটালীপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
রুবেলের ভাবী শারমিন বেগম জানান, রেশমা বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই রুবেলের প্রতি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী। রুবেল তার ব্যবসা ও সংসার নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন, কিন্তু বাড়ি ফিরলেই স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া লেগে যেত। এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করলেও পরবর্তীতে সালিশের মাধ্যমে সেই স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়। তবে রেশমা ও তার পরিবারের ক্ষোভ কমেনি এবং তারা রুবেলকে হত্যার উদ্দেশ্যে এমন ভয়ংকর কাজ করেছেন।
রুবেলের ভাগ্নে ছামিউল শেখ জানান, তারা যখন রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছিলেন, তখন রেশমা তার স্বামীর টাকা, সোনা-গহনা নিয়ে পালিয়ে যান। বর্তমানে রুবেল হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন, অথচ তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির কেউ তার খোঁজ নিচ্ছে না।
রুবেলের মেয়ে রুকাইয়া ইসলাম (১১) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, "আমার মা কখনোই ভাবেনি বাবা মারা গেলে আমাদের দুই ভাইবোনের কী হবে? আমরা কীভাবে বাঁচবো? আমি তার কঠোর শাস্তি চাই।"
এ বিষয়ে জানতে রেশমা বেগমের বাবার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, "এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"
রেজা