ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১

ব্রহ্মপুত্রে নাব্য সংকট ফেরি চলাচল বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ২২:০০, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ব্রহ্মপুত্রে নাব্য সংকট ফেরি চলাচল বন্ধ

চিলমারী-রৌমারী নৌ রুটে ব্রহ্মপুত্র নদে নাব্য সংকটে ফেরি বন্ধ। ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার

চিলমারী-রৌমারী নৌ রুটে ব্রহ্মপুত্র নদে সারা বছর ড্রেজিং চললেও নাব্য সংকট কাটছে না। ড্রেজিংয়ে সরকারের লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্য সংকট নিরসনের জন্য গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর বিআইডব্লিউটিসির সে সময়কার চেয়ারম্যান ড. একেএম মতিউর রহমান নদী খননের তাগিদ দিলেও কর্ণপাত করেনি বিআইডব্লিউটিএ।
স্থানীয়রা বলছেন, নাব্য সংকট কাটাতে ব্যর্থ বিআইডব্লিউটিএ। নদী ড্রেজিংয়ে গাফিলতি এবং নৌকার মালিকদের সঙ্গে সিন্ডকেটের কারণে এ অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের ফেরি আলোর মুখ দেখছে না। এতে চিলমারী-রৌমারী নৌ রুটে যাতায়াতকারী মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্ট হয়েছে।
জানা গেছে, চিলমারীর রমনা ঘাট থেকে রৌমারীর ফলুয়ার চর ঘাটের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। এই ২২ কিলোমিটার নদী পথ পাড়ি দিতে নানা সংগ্রাম করতে হয় এ অঞ্চলের মানুষদের। কখনো চর হেঁটে বা কখনো নৌপথে। দীর্ঘদিনের ভোগান্তর অবসান ঘটিয়ে ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চিলমারী-রৌমারী নৌ রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

ফেরি চলাচলের ফলে এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ জনভোগান্তি কিছুটা কমলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। নাব্য সংকটের অজুহাত দেখিয়ে বছরের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে ফেরি চলাচল। ফলে বাড়তি ভাড়াসহ নানা ভোগান্তির মধ্যে নৌকায় পারাপার করতে হচ্ছে দুই পাড়ের মানুষদের।

ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দরের ট্রাকচালক হাসান আলী জানান, গত বছর বন্যার আগে নেভিগেশন (বাতি) ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু বন্যার সময় বাতি তুলে ফেলা হয়। পরবর্তীতে আর স্থাপন করা হয়নি। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে তিনটার পর ফেরিগুলো লোড নেওয়া হয় না। দেখা যেত কিছু গাড়ি দেরিতে পৌঁছলে সে ক্ষেত্রে গাড়িগুলো সারা রাত অপেক্ষা করে পরেরদিন পারাপার করতে হতো। নেভিগেশন ব্যবস্থা থাকলে রাতে গাড়ি পারাপারের সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যাবে।’
এ অবস্থায় চিলমারী-রৌমারী নৌ রুটে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন ফেরি চলাচল অব্যাহত রাখতে ড্রেজিংকরণ, উভয় প্রান্তে লো-ওয়াটারঘাট ও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ,  রাত্রিকালীন বাতি স্থাপন করলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলে এ অঞ্চলে অর্থনীতির চাকা ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করেন অনেকে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চিলমারীর ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান বলেন, গত ডিসেম্বরের ২৩ তারিখ থেকে ফেরি কদম ও কুঞ্জলতা বন্ধ রয়েছে। এতে করে বাড়তি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে পরিবহন ও যাত্রীদের। দ্রুত ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলে এ ভোগান্তি নিরসন করা সম্ভব হবে।
বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের পাঁচটি ড্রেজারের মধ্যে তিনটি ড্রেজার দিয়ে খননকাজ অব্যাহত রয়েছে। একদিকে খনন করলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তবে কবে নাগাদ ফেরি চালু হবে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।’

×