চিকিৎসকবিহীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের অবস্থান
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চলছে জোড়াতালি দিয়ে। রোগী ভর্তির ২৪ ঘণ্টায়ও দেখা মিলছে না ডাক্তারদের। যে কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। ইনডোরে ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসায় সরকারিভাবে ২৪ প্রকারের ওষুধপত্রের তালিকা থাকলেও রোগীদের অভিযোগ রয়েছে অধিকাংশ ওষুধ কিনতে হয় বাইরে থেকে।
আউটডোরে ৩ টাকার টিকিটের পরিবর্তে নেওয়া হচ্ছে ৫ টাকা। রোগীদের ভর্তির ক্ষেত্রে জরুরি বিভাগেও অনেকের গুনতে হচ্ছে টাকা। হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের এ নিয়ে নেই কোনো নজরদারি। এলাকার সচেতন মহলের দাবি চিকিৎসা নিতে এসে সাধারণ রোগীদের যেন এহেন ভোগান্তি পোহাতে না হয়। সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপকূলীয় এ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ ১টি পৌরসভার প্রায় ৪ লাখ মানুষের গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত মোরেলগঞ্জ হাসপাতালটি এখন চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। আশির দশকের ৩৫ শয্যা এ হাসপাতালটি পরবর্তীতে ৫০ শয্যায় রূপান্তরিত হলেও উন্নতি হয়নি চিকিৎসা ব্যবস্থার।
ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত শাহ আলম হাওলাদার রবিবার ২টায় হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরেরদিন সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোনো ডাক্তারই তাকে দেখেননি, শুধুমাত্র দায়িত্বে থাকা নার্স দেখেছেন রোগীদের। জরুরি বিভাগ থেকে ওষুধ লিখে দিয়েছে, বাইরে থেকে তাকে কিনতে হয়েছে মেট্রো আইভি ও নেক্সজাম ৪০ এমজি ইনজেকশন। রোগী মিজান হাওলাদার তাকেও বাইরে থেকে বমির ইনজেকশন কিনে আনতে হয়েছে।
জাকির হাওলাদার রবিবার বিকেলে ভর্তি হলেও সোমবার দুপুর পর্যন্ত রাউন্ডে ডাক্তারের দেখা পাননি। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১১ মাস বয়সি শিশু আব্দুল্লাহ রাত সাড়ে ১১টায় ভর্তি করানো হলেও পরেরদিন দুপুর পর্যন্ত বেডে চিৎকার করছে, অভিভাবকরা বলছেন, ডাক্তার দেখতে আসেনি। রমিচা বেগম স্বামী হানিফ শেখ দুজনেই চিকিৎসার জন্য ভর্তি হতে জরুরি বিভাগে গুনতে হয়েছে টাকা।
এ সম্পর্কে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি পৌরসভায় একটি মিটিংয়ে রয়েছেন। রোস্টার অনুযায়ী ডাক্তাররা দায়িত্ব পালন করবেন সরবরাহের বাইরে ওষুধের গ্রুপ পরিবর্তনের বিষয়ে তার জানা নেই। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হলে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।