ছবি: সংগৃহীত।
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষিকা গত তিন বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। অনুমতি ছাড়াই একজন ফ্রান্সে এবং অন্যজন পর্তুগালে অবস্থান করছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী অভিযোগ করলেও এখনো কোনো প্রতিকার পাননি, ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
জানা গেছে, সহকারী শিক্ষিকা ফালগুনি পাল ইতি (পিতা: জিতেন্দ্র পাল, গ্রাম: মিঠাপুর) ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। একই বিদ্যালয়ের অপর সহকারী শিক্ষিকা মাসুমা সুলতানা গাজী (পিতা: তাজ উদ্দিন আহমদ, গ্রাম: জয়নগর) ২০২৩ সালের ১ মার্চ থেকে অনুপস্থিত।
বর্তমানে পাঁচজন শিক্ষকের জায়গায় তিনজন শিক্ষক অতিরিক্ত চাপ নিয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই দুই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বা প্রধান শিক্ষিকাকে কিছু না জানিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষিকা ফালগুনি পাল ইতি ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বামীর সঙ্গে ফ্রান্স চলে গেছেন এবং সেখানে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। একইভাবে, সহকারী শিক্ষিকা মাসুমা সুলতানা গাজী স্বামীর সঙ্গে পর্তুগালে গিয়ে নাগরিকত্ব নিয়েছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নবীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে একাধিকবার অবহিত করলেও এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তবারুক বেগম বলেন, আমার বিদ্যালয়ের দুইজন সহকারী শিক্ষিকা দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকায় পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে। দ্রুত ওই পদগুলোতে নতুন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি। আমরা একাধিকবার জানিয়েছি, কিন্তু এখনো ওই পদগুলো শূন্য ঘোষণা করা হয়নি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রোমান মিয়া বলেন, পদগুলো শূন্য ঘোষণা করতে হবিগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যেহেতু তারা কোনো লিখিত ছুটির আবেদন করেননি, বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিভিন্ন জটিলতার কারণে পদ শূন্য ঘোষণা করতে বিলম্ব হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও দুই শিক্ষিকা নিয়মিত সরকারি সুবিধা নিয়ে গেছেন কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ না হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
সায়মা ইসলাম