ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১

প্রতিষ্ঠার ১১ বছরেও চালু হয়নি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ

মো. এনামুল হক এনা, উপকূল প্রতিনিধি, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৮:৩৩, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রতিষ্ঠার ১১ বছরেও চালু হয়নি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ

ছবিঃ সংগৃহীত।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ১১ বছরেও চালু হয়নি। শুরু হয়নি হাসপাতালের কার্যক্রম। ভূমি অধিগ্রহন, করোনা ও বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপনসহ নানা জটিলতা দেখিয়ে তিন দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। তবে চলতি জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করে হস্তান্তরের আশ্বাস কর্তৃপক্ষের। 

জানা যায়, পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কম্পাউন্ডের সিসিউ ভবনে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালে।  একই বছরে একনেকে পাঁচশত ৪৬ কোটি টাকা ব্যায়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প পাস হয়। পরবর্তীতে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে ২০১৬ সালে শুরু হয় এ প্রকল্পের কাজ। 

২০২০ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনাসহ নানা কারণে ২ দফায় ২০২৩ সাল পর্যন্ত এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যে ভবনের কাজ শেষ হলেও নির্মাণজনিত ত্রুটির কারণে এতে দেখা দেয় বড় ধরনের ফাটল। দীর্ঘ সময় অব্যাবহৃত থাকায় দেয়ালগুলোত দেখা দিয়েছে ড্যাম্প। এসব মেরামত, মালপত্র ক্রয়, যন্ত্রপাতি স্থাপন ও বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য উপকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত আরো একদফা সময় বাড়ায় কর্তৃপক্ষ। এরই সাথে প্রায় একশত কোটি টাকা বাড়িয়ে বর্তমানে এ প্রকল্পের সাম্ভব্য নির্মাণ ব্যায় ধরা হয় ছয়শত ৫১ কোটি টাকা। 

এদিকে ক্রমান্বয়ে জনসংখ্যাবৃদ্ধির ফলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। হাসপাতালটিতে প্রতিদিন এর ধারন ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুন রোগী ভর্তি থাকে। কাজ দ্রুত শেষ করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালুর মাধ্যমে এটি ৫০০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত হলে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়বে বলে মনে করেন রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দৈনিক জনকন্ঠকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধয়ক ডাঃ দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা বলেন, বর্তমানে আমাদের প্রতিদিন হাসপাতালে ধারন ক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। এতে আমাদের শয্যা সংকটের কারণে চিকিৎসা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। যদি আমাদের আরো একটি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয় তাহলে আমাদের সমস্যা আর থাকবে না। আমরা পাঁচশত শয্যার সুবিধা পাবো।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক ডাঃ এসএম কবির হাসান বলেন, ইতিমধ্যে অত্যাধুনিক এ হাসপাতালটির ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। লোকবল নিয়োগের চাহিদা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। আশা করি চলতি বছরের আগামী জুনের মধ্যে হাসপাতালটি চালুর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবার মান এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস বলেন, আমাদের কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। আমরা আশা করছি সকল কাজ চলতি বছরের জুনের মধ্যে শেষ করতে পারবো।

প্রসঙ্গত, সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতিসহ এই হাসপাতালে রয়েছে ১৩টি লিফ্ট, হাসপাতালটি চালু হলে এই জেলার চিকিৎসা সেবা আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। বর্তমানে বেড না পেয়ে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হয় হাসপাতালের মেঝে। নতুন ভবন চালু হলে থাকবে না হাসপাতালের শয্যা সংকট বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

×