ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১

পটুয়াখালীতে লোহার ২৪২ সেতু জরাজীর্ণ, দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

পটুয়াখালীতে লোহার ২৪২ সেতু জরাজীর্ণ, দুর্ভোগ

জরাজীর্ণ সেতুগুলোর একটি

পটুয়াখালী জেলার ৮ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সংস্কারাভাবে ২৪২টি লোহার সেতু  জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব সেতু দিয়ে স্থানীয়রা উপজেলা ও জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে আগে সহজে যাতায়াত করতে পারলেও এখন তারা দুর্ভোগে পড়েছেন। স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এসব লোহার সেতু দ্রুত মেরামত বা পুনর্নির্মাণের জন্য স্থানীয়রা দাবি জানিয়েছেন। 
পটুয়াখালীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জেলার গ্রামীণ সড়কে যোগাযোগ সহজতর করতে জেলার ৮টি উপজেলার বিভিন্ন খালের ওপর লোহার সেতু নির্মাণ করে। ৯০ দশক থেকে ২০০০ সালের মধ্যে এসব সেতু নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ সংস্কারাভাবে এসব সেতু জড়াজীর্ণ হয়ে পড়ে। আবার কোনোটি জলযানের ধাক্কায় ভেঙেও যায়।

এসব সেতুর মধ্যে পটুয়াখালী এলজিইডি জেলায় ২৪২টি সেতু জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর মধ্যে রয়েছে বাউফল উপজেলায় ৬৩টি, মির্জাগঞ্জে ৫৬টি, পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ৪২টি, গলাচিপায় ৩৫টি এবং দশমিনা, রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়ায় ১০টি করে। এর মধ্যে ৪টি সেতু মেরামতযোগ্য হলেও বাকিগুলো প্রতিস্থাপন করতে হবে অর্থাৎ নতুন সেতু নির্মাণ করতে হবে।
এসব জরাজীর্ণ সেতুর মধ্যে একটি হচ্ছে দুমকি উপজেলার লেবুখালী সরকারি হাবিবুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ভাড়ানী খালের ওপর নির্মিত সেতু। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে বালুভর্তি ট্রলারের ধাক্কায় সেতুটির একাংশ ভেঙে খালে পড়ে গেলে দু’পাড়ের সরসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, খালের উভয় তীরে বসে সাপ্তাহিক বাজার।

বাজারের লোকজন, লেবুখালী সরকারি হাবিবুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারীসহ কয়েক হাজার পথচারী লোহার সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করত। এখন তারা খেয়া নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়। এ নিয়ে আমরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও সেতু নির্মাণ করা হয়নি।

এদিকে, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের লক্ষ্মীবাজার-সংলগ্ন খাপড়াভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত ২০২০ সালের ২ এপ্রিল জরাজীর্ণ লোহার সেতুটি ভেঙে পড়ে। বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এ খালে প্রবল জোয়ারের চাপে সেতুটি মাঝ বরাবর ভেঙে পড়ায় অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি হচ্ছে।
গলাচিপা উপজেলার আমখোলার স্থানীয়রা জানান, আমাদের এলাকায় নির্মিত আয়রন কমপক্ষে ৫টি সেতু দীর্ঘ সংস্কারাভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পারাপারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব সেতু মেরামত বা প্রতিস্থাপনের জন্য উপজেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় এবং এলজিইডি কার্যালয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন আলী মীর জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মিত ২৪২টি জরাজীর্ণ সেতুর তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনা পেলে প্রাক্কলন তৈরি করে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। এবং বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এসব সেতু মেরামত বা নতুন সেতুু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

×