নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রহ্মপুর বাজার সংলগ্ন খেয়াঘাটে সেতুর অভাবে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রহ্মপুর বাজার সংলগ্ন খেয়াঘাটে বারনই নদীতে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থী, কৃষকসহ এলাকার হাজারো মানুষ। ৫৩ বছরে সেতু না হওয়ায় হতাশ এলাকাবাসী। বর্ষাকালে ডিঙ্গি নৌকাই যেন এখানকার মানুষের শেষ ভরসা। সেতু না থাকায় পারাপারের সময় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হন। এই অবস্থায় দ্রুত সময়ের মধ্যে জনসাধারণের পারাপার ও ব্যবহার উপযোগী একটি সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বজলু মাস্টার, জালাল মাঝি, সেলিম রেজা, রাব্বি হোসেনসহ অনেকে জানান, নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রহ্মপুর বাজার খেয়াঘাট এলাকায় নৌকা দিয়ে বাঁশিলা খেয়াঘাট, আঁচড়াখালিসহ কয়েক গ্রামের শিক্ষার্থী, কৃষক, সাধারণ মানুষ পারাপার হন। স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরেও গুরুত্বপূর্ণ এ খেয়াঘাটে সেতু নির্মাণ করা হয়নি। দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় সেতু নির্মার্ণের নানা আশ^াস দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
এর আগেও এখানে নৌকায় নদী পারাপারের সময় যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণ নদী পারাপার হন। ব্রহ্মপুর খেয়াঘাট এলাকার আশপাশে ইউনিয়ন পরিষদ, প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাজার, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ নানা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেতু না থাকায় এখানকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে পারেন না কৃষক। স্থানীয়দের দাবি, সেতু নির্মিত হলে পাল্টে যাবে এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য। প্রসার হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের।
ব্রহ্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান জানান, প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসী নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে থাকেন। এলাকার সার্বিক উন্নয়নে সকলের ব্যবহার উপযোগী একটি সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নলডাঙ্গা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী অরূপ কুমার জানান, বারনই নদীর ওপর বেশ কিছু স্থানে ব্রিজ নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
পঞ্চগড়ের গড়িনাবাড়িতেও দাবি সেতুর
স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় থেকে জানান, পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নে প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচাসড়ক গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করেছেন। গত প্রায় দুই মাস ধরে দিনরাত পরিশ্রম করে সড়কটি নির্মাণ করেছেন। তবে সড়কটির ডাঙ্গাবাড়ি অংশে একটি সেতুর দাবি তাদের। সেতুটি নির্মিত হলে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা দূর হয়ে দ্রুতই পানি নিষ্কাশন হবে। এতে ভোগান্তি কমার পাশাপাশি সুফল ভোগ করবেন তারা।
সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যার পরে ও সকাল বেলা বৃদ্ধ, যুবক, তরুণ, শিশুসহ শতাধিক গ্রামবাসী মিলে মোল্লাপাড়া থেকে ডাঙ্গাবাড়ি কাঁচা সড়কটি নির্মাণ করছেন। কারও হাতে কোদাল, কারও কাধে মাটি বহনের ভাড়। কেউ সড়কের পাশের খেত থেকে মাটি কাটছেন, আবার কেউ সড়কে এনে মাটি ফেলছেন। এভাবেই দুই মাসের পরিশ্রমে সড়কটি নির্মাণ প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। তবে সড়কের ডাঙ্গাবাড়ি অংশে কিছু ব্যক্তি সড়কের জমি দখল করে রাখায় সড়কের কাজ শুরু করা যায়নি। তবে শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন তারা।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার মোহন মিনজী বলেন, গ্রামবাসীর এত বড় কাজকে সাধন করার জন্য সাধুবাদ জানাই। তারা অনেক বড় একটি কাজ করেছেন। তবে তাদের একটি সেতুর দাবি রয়েছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবিটি পূরণের চেষ্টা করব।