ছবিঃ সংগৃহীত
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের পেরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির মতবিনিময় সভায় যাওয়ার পথে হেসাখাল ইউপি স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সেলিম ভূঁইয়া (৪৫) এর উপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার নিহতের ভাই আব্দুর রহিম বাদী হয়ে বিএনপি নেতা মোবাশের আলম ভূঁইয়াসহ ৪০ জন এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাত ৪০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় রোববার দুপুরে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে আটক করা হয়েছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে থানার উপ-পরিদর্শক সমর বড়ুয়া। আটককৃতরা হলেন, উপজেলার বটতলী ইউপির কাশিপুর গ্রামের ফারুক, পৌরসভার গোত্রশাল গ্রামের হেলাল ও আফছার।
এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক হত্যার বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাবেক এমপি গফুর ভূঁইয়ার অনুসারী নেতাকর্মীরা। নিহত সেলিম হেসাখাল খিলপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে ও চার সন্তানের জনক।
জানা যায়, শনিবার (১ জানুয়ারী) সাবেক এমপি আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা উপজেলার বাসন্ডা গ্রামের হায়াতুন নবীর বাড়ী থেকে সামাজিক অনুষ্ঠান শেষ করে পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলা বাজারে বিএনপির মতবিনিময় সভায় যাওয়ার পথে বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজার এলাকায় সেলিম ভূঁইয়ার মোটরসাইকেল গতিরোধ করে অতর্কিত হামলা চালায় বিএনপি নেতা মোবাশের আলম ভূঁইয়ার অনুসারী কামাল, মোবারক, কুতুব, মমিন ও লিটন। এতে তারা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে সেলিম ভূঁইয়াকে হত্যা করে। বাকী দু’জনকে বেড়ধক পিটিয়ে গুরত্বর আহত করে ফেলে চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী গুরত্বর আহত আবুল কালাম বলেন, আমরা দাওয়াত খেয়ে কাকৈরতলা বিএনপির মতবিনিময় সভায় যাওয়ার পথে বাঙ্গড্ডা বাজার পশ্চিম বাজার পৌঁছলে আগ থেকে মোবাশেরের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। এসময় আমরা তাদেরকে দেখে মোটরসাইকেল ঘুরনোর চেষ্টা করলে ৭০-৮০ জনের একটি গ্রুপ আমাদেরকে বেড়ধক পিটাতে থাকে। একপর্যায়ে পৌর স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আলীর মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা সেলিম ভূঁইয়া দৌঁড় দিলে তাকে ঘেরাও করে লাঠিসোটা ও হাতুড়ি দিয়ে পিটাতে থাকে। তার মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা চলে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য আবু সায়েম শিপু বলেন, আমাদের পুর্ব নির্ধারিত পেরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির কাকৈরতলা বাজারে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূঁইয়া উপস্থিত থাকার কথা। মতবিনিময় সভায় নেতাকর্মীরা যাতে উপস্থিত না হয় পুর্বে থেকে উৎপেতে থাকা কথিত বিএনপি নেতা মোবাশরের নির্দেশে কাদবা গ্রামের কামাল হোসেন মজুমদার, বাঙ্গড্ডা গ্রামের মোবারক হোসেন, মান্দ্রা গ্রামের আব্দুল মমিন, পশ্চিমখাঁড়ঘরের আব্দুল হান্নান তুষার, মক্রবপুর গ্রামের সালাউদ্দিন, কাদবা গ্রামের মহিন, করের ভৌমরা গ্রামের ফারুক হোসেন কুতুব ও বালিয়াপুর গ্রামের লিটনের নেতৃত্বে আমাদের নেতকর্মীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে একজন নিহত ও ২ জন গুরুত্বর আহত হন। রোববার বিকেলে দায়েমছাতি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, এঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছে। পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের আটকের চেষ্টা চলছে।
আসিফ