ছবি: সংগৃহীত।
বরগুনায় নির্মিত দেশের একমাত্র নৌকা জাদুঘরটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে জেলা বিএনপির নেতা আমিনুল ইসলাম স্বপন এবং মুরাদুজ্জামান টিপন ১০-১২ জন শ্রমিক নিয়ে এসে জাদুঘরের সামনের অংশ খুলে নিয়ে যান। তারা জানিয়েছে, বাকি অংশ তারা রবিবারে নিয়ে যাবেন। তাদের দাবি, সাবেক জেলা প্রশাসক এই জাদুঘরটি নির্মাণের নামে সরকারি জায়গা দখল করে লুটপাট করেছেন, তাই এটি তারা ভেঙে ফেলছেন।
এই ঘটনা নিয়ে জাদুঘরের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং পরিবেশকর্মী আরিফুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি কান্নাভরা কণ্ঠে লাইভে এসে জানান, "আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নৌকার নকশা সংগ্রহ করেছি, ছোট ছোট নৌকা কারিগরের মাধ্যমে তৈরি করেছি। এভাবে অনেক শ্রম ও সময় দিয়ে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।" তিনি আরো বলেন, "জাদুঘরের নাম নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, কিন্তু এর মানে এই নয় যে কেউ নৌকাগুলো ধ্বংস করবে।"
এদিকে, স্থানীয়রা বলছেন, শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ নৌকা জাদুঘরটি নির্মাণ করেছিলেন। তারা অভিযোগ করছেন, নৌকা জাদুঘরের জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়েছিল এবং জেলার সরকারি চাকরিজীবীদের কাছ থেকে একদিনের বেতনও সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাদের মতে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের দালালি এবং চাঁদাবাজি করা হয়েছিল।
‘বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর’ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদ-নদীতে চলাচল করা ঐতিহ্যবাহী নৌকা এবং আমাদের নৌকা সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করানোর জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বরগুনা পৌর গ্রন্থাগার ভেঙে ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকার আদলে দেশের প্রথম নৌকা জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হয়েছিল।
বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজবিউল কবির জানিয়েছেন, "এখানে আগে পৌর গণ-পাঠাগার ছিল, যা ভেঙে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর তৈরি করা হয়েছিল। এখান থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এটি মূলত তৎকালীন সরকারের পক্ষে তেলবাজি করার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন জনগণ এই জাদুঘরটি ভেঙে ফেলছে, এবং যারা এটি ভাঙছে তারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক।"
নুসরাত