ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১

নাটোরের শ্যালক-দুলাভাই গেলেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, শ্যালক নিহত

কালিদাস রায়, নাটোর

প্রকাশিত: ১৭:৪৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নাটোরের শ্যালক-দুলাভাই গেলেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, শ্যালক নিহত

ছবি : সংগৃহীত

সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার হুলহুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ন কবির ও তার দুলাভাই রহমত আলী। দালালদের খপ্পরে পড়ে মাসিক আড়াই লক্ষ টাকা বেতনের চাকরির লোভে তারা জমি জমা, স্বর্ণালংঙ্কার বিক্রি এবং উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে পাড়ি জমান রাশিয়ায়। কিন্তু সেখানে চাকুরির নামে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য হন তারা।

এরই মধ্যে গত ২৬ জানুয়ারি যুদ্ধে হুমায়ন কবির প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে রহমত আলী দেশে ফিরতে চান। এই অবস্থায় ছেলের ও জামাইয়ের ছবি হাতে নিয়ে বুকফাটা আর্তনাদ করে চলেছেন মা কারীমুন বেগম। এমন ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দালালদের খপ্পরে পড়ে মাসিক আড়াই লক্ষ টাকা বেতনের আশায় জমি-জমা, স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে রাশিয়ায় পাড়ি জমান তারা। গত বছরের ২৮ অক্টোবর ড্রিম হোম ট্রাভেল এন্ড টুরস লিমিটেড এর মাধ্যমে তারা রাশিয়ায় যান। সেখানে পৌছানোর পরে তাদেরকে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। গত ২৬ জানুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন ড্রোন হামলায় নিহত হন হুমায়ন কবির। 

হুমায়নের স্ত্রী তারা বেগম জানান, স্বামীকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমাদের স্বপ্ন অধরা থেকে গেল। আমার ননদের জামাই বাঁচার জন্য বারবার ফোন করে আকুতি জানিয়েছেন। দালালদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা কেবল নানা আশ্বাস দিচ্ছে কিন্তু কোন তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দ্রুত আমার স্বামীর মরদেহ ও দুলাভাইকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

হুলহুলিয়া সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের সহ-সভাপতি শাকিল আহম্মেদ তপু জানান, ঘটনাটি জানার পর থেকেই আমরা পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি এবং তাদের পাশে রয়েছি। দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। অপরদিকে হুমায়নের মরদেহ ও রহমত আলীকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে দালালদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ঢাকার ড্রিম হোম ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস লিমিটেড কোম্পানির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী পরিবার বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত বা মৌখিকভাবে জানায়নি। 
 

কালিদাস রায়/মো. মহিউদ্দিন

×