ছবি: জনকণ্ঠ
ফরিদপুর পৌরসভায় মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশ সনদ পেতে দুই মাস পর্যন্ত লাগছে। সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, মেয়রের দায়িত্বে প্রশাসক ও কাউন্সিলরের পরিবর্তে সরকারি দপ্তরের প্রধানরা আসায় ঠিকমতো মিলছে না সেবা। ফরিদপুর পৌরসভার সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নাগরিকরা। কয়েক মাস ধরেই নাগরিক সনদের সংশোধনী ছাড়ছে না জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।
ফরিদপুর পৌরসভায় প্রশাসকের দায়িত্বে আছেন জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম। সংশোধনী কাজে স্থানীয় সরকার বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন এডিএলজি মো. হাবিবুল্লাহ।
পৌরসভার জন্মনিবন্ধন শাখার কম্পিউটার অপারেটর সৈকত আহমেদ তন্ময় জনকন্ঠ কে জানান, নির্বাচিত কাউন্সিলরের অধীনে তারা নাগরিক সনদ দিতে ১ দিন সময় নিতেন। এখন তা ১০-১৫ দিন লাগছে। একইভাবে ওয়ারিশ সনদে দুই মাস ও জন্ম-মৃত্যু সনদে লাগছে ২০ দিন থেকে এক মাস। যেগুলো আগে ১ সপ্তায় দেওয়া যেত। কয়েক মাস ধরে স্থানীয় সরকার শাখা থেকে সংশোধনী না ছাড়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি পৌরসভার ২৭ ওয়ার্ডে ২৭ কাউন্সিলর ও ৯ মহিলা কাউন্সিলর ছিলেন। পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের পর তাদের জায়গায় কাজ করছেন বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের আটজন। তাদের সহায়তায় ২৭ ওয়ার্ডে ২৭ কর্মচারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পৌরসভার প্রেষণে অফিস সহকারী গোলাম মওলা মলি জনকন্ঠ কে বলেন, সনদের কোনো আবেদন পৌরসভার দায়িত্বরত কর্মচারী গ্রহণ করে ভেরিফিকেশনের জন্য নেন কাউন্সিলরের কাছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব দেন অফিসের দু’জন কর্মকর্তাকে। তারা সম্মতি দিলেই অনুমোদন দেন কাউন্সিলর। আবার কাউন্সিলর বাইরে থাকলে তাঁর কর্মস্থলে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ফলে এখন একটি আবেদন অনুমোদনে চারটি ভেরিফিকেশন লাগছে। অথচ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি একবার ভেরিফিকেশন সই দিলেই অনুমোদন হয়ে যেত।
পৌরসভার বাজার পরিদর্শক কাউছার খান জনকন্ঠ কে বলেন, ‘আমরা নাগরিকের আবেদন ভেরিফাই করে দিলেও দায়িত্বরত অফিসপ্রধান যারা কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছেন, তারা অনলাইনে অনুমোদন দিতে সময় নিচ্ছেন।
পৌরসভার জন্মনিবন্ধন শাখার কম্পিউটার অপারেটর সৌরভ ঘোষ শুভ জনকন্ঠ কে বলেন, সার্ভারে সমস্যার কারণে মাঝেমধ্যে কিছু জটিলতা হয়। বাড়তি কোনো সময় লাগে না। কাউন্সিলরের কাছ থেকে ভেরিফাই হয়ে অনলাইনে আবেদন পেয়ে যাচ্ছি। এর পর রেজিস্ট্রারের কাজ শেষে নাগরিকের হাতে সনদ তুলে দিচ্ছি।
পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মামুনুর রশিদ জনকন্ঠ কে জানান, গত ২৭ জানুয়ারি তিনি অনলাইনে নাগরিক সনদের জন্য আবেদন করেন। পৌরসভায় গেলে জানানো হয়, এটি ভেরিফিকেশনে কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করা ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহাদুজ্জামান ঢাকায় অবস্থান করছেন। ৩ ফেব্রুয়ারি ভোটার হওয়ার শেষ দিন। নাগরিক সনদ ছাড়া ভোটার হওয়া যাবে না। ঢাকার খামারবাড়ি গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে সই আনতে অথবা তাঁর ফরিদপুরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন কর্মকর্তারা।
পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আসাদুর রহমান জনকন্ঠ কে বলেন, ওয়ারিশ সনদের জন্য গত ২১ নভেম্বর আবেদন করেছি। এখনও অনুমোদন হয়নি। আমার ওয়ার্ডের দায়িত্বরত কর্মকর্তা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুজ্জামান ফরিদপুরের চেয়ে ঢাকায় অফিস করেন বেশি।
ফরিদপুর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিলুর রহমান জনকন্ঠ কে বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আবেদনের তথ্য যাচাই করতে সরকার নির্দেশনা দিয়েছে। তাদের দপ্তরে বিলম্ব হলে পৌরসভার কিছু করার নেই।
শিহাব