ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১

আলীকদমে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান

প্রকাশিত: ২১:২০, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫

আলীকদমে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

.

আলীকদম উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক  অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উন্নয়ন কাজটি বাস্তবায়নে অনিয়ম করতে সহযোগিতা করছে স্বয়ং এলজিইডি’র  আলীকদম উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ এবং সহকারী প্রকৌশলী শরিফ।
সরেজমিনে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নামমাত্র মূল্যে কাজটি বাগিয়ে নেয় রাজু কনস্ট্রাকশন লাইসেন্স নামে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাজু বড়ুয়া। পরে কাজটি চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর করেন আলীকদম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শফিউল আলম ও সদর ইউপি যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামের কাছে। তারা এখনো আগের প্রভাব বিস্তার করে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে মনগড়া কাজ করে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এ ছাড়া আলীকদম উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ ও সহকারী প্রকৌশলী শরিফের বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম দুর্নীতিতে সার্বিক সহায়তা করছেন বলে স্থানীয়দের মধ্যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
এলজিইডি’র তথ্যমতে, আলীকদম উপজেলার চম্পট পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখ থেকে উত্তর পালং পাড়া সড়কটি ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২শ ফুট সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি ৩টি ইউ বক্স ড্রেইন, ৩শ মিটারের গাইড ওয়াল ও ৩০ মিটারের আরসিসি রিটার্নিং ওয়াল; ১২শ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের এই সড়ক নির্মাণে ৬ ইঞ্চি বালির স্তর, ৬ ইঞ্চি বালু ও ইটের খোয়া মিশ্রিত স্তর ও ৬ ইঞ্চি ইটের খোয়ার স্তর দিয়ে নির্মাণ করার কথা থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী ঠিকাদার কাজ করেনি বলে দাবি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, সড়কটির বক্স নির্মাণের সময় ৬ ইঞ্চি বালুর স্তর, ৬ ইঞ্চি  বালু-ইটের খোয়ার সমান মিশ্রণে সাব বেইজের স্তর ও ওপরভাগে ৬ ইঞ্চি নির্দিষ্ট আকারের ইটের খোয়ার স্তর নির্মাণ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। যেখানে অধিকাংশ স্থানেই বালুর স্তর দেওয়া হয়েছে ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি, বালু ও ইটের মিশ্রণের স্তর সমান না রেখে খোয়ার তুলনায় পাহাড় কাটা মাটির পরিমাণ ছিল বেশি। এ ছাড়াও কাজটির মেয়াদ শেষ হলেও কার্পেটিংয়ের কাজ না করে ফেলে রাখে এলজিইডি’র অসাধু কর্মকর্তাদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে ৭০ লাখ টাকা বিল উত্তোলন করার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ঠিকাদার শফিউল আলম বলেন, এলজিইডির নিয়ম ও নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
আলীকদম স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন,  ঠিকাদার যেভাবেই কাজ করুক না কেন কাজ শেষে ল্যাব টেস্টে উন্নীত হলেই ঠিকাদারকে বিল প্রদান করা হবে।
বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার হোসেন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে ঠিকাদারকে ৭০ লাখ টাকা বিল প্রদান করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের নির্ধারিত সময় অতিক্রম হওয়ায় পুনরায় সময় বাড়াতে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে আবেদন করেছেন। সম্ভবত এই ক্ষেত্রে ব্যাংক গ্যারান্টি রিনিউ না করায় ঊর্ধ্বতন অফিস থেকে অনুমতি আসেনি। তবে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।

×