ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১

পর্যটকের ভিড়ে কুয়াকাটা মুখরিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া

প্রকাশিত: ২১:১৩, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫

পর্যটকের ভিড়ে কুয়াকাটা মুখরিত

শুক্রবার ছুটির দিনে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ভিড়

না তীব্র শীত, না গরম। বইছে স্বস্তিদায়ক আবহাওয়া। প্রকৃতির এই উদারতাকে কাজে লাগিয়ে কুয়াকাটায় বেড়েছে পর্যটকের ভিড়। হাজারো পর্যটক শুক্রবার সকালে ভিড় করেন সৈকতের শূন্য পয়েন্টে। দুপুরে কানায় কানায় পূর্ণ হয়। শূন্য পয়েন্ট থেকে সৈকতের দুইদিকে দুই কিলেমিটার এলাকা পর্যটকের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। শত শত পর্যটক দীর্ঘ সময় গোসলে মত্ত থাকেন। পরিবার-পরিজনসহ আসা পর্যটক রয়েছে বহু। এ ছাড়া পিকনিক পার্টির উপস্থিতিও লক্ষণীয়। সৈকতের বেলাভূমে হাঁটাচলা-দৌড়াদৌড়ি করা পর্যটকরা গোটা সৈকতকে মুখরিত করে তোলেন। আগতরা ঘুরেফিরে দেখেন দীর্ঘ সৈকতের লেম্বুরচর থেকে গঙ্গামতি পর্যন্ত। উপভোগ্য সময় কাটান। তারা প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যমণ্ডিত কুয়াকাটা মিশনে ব্যস্ত রয়েছেন।

কুয়াকাটা সৈকত ছাড়াও পর্যটকরা ঘুরছেন কিছুটা ভিন্ন জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত রাখাইন সম্প্রদায়ের পল্লিতে। রাখাইনদের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার, তাদের মঠসহ বিভিন্ন স্থাপনা দেখছেন। সঞ্চার করছেন ভিন্ন অভিজ্ঞতা। বৃহৎ সীমা বৌদ্ধ বিহার দেখতেও ভুল করছেন না অনেকে। কেনাকাটা করছেন রাখাইনদের তৈরি কাপড়-চোপড়। অবলোকন করছেন জেলেদের মাছ শিকারের দৃশ্য, শুঁটকি পল্লি দর্শনে ভুল করছেন না। আবার পাখি ও লাল কাঁকড়ার চর বিজয় ভ্রমণে যাচ্ছেন শত শত পর্যটক। সবশেষ ভাগ্যাকাশ যদি সহায় হয় তাহলে একই স্থানে দাঁড়িয়ে ভোরের সমুদ্রস্নাত সূর্যোদয় এবং সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের বিরল মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। সন্ধ্যার পরে আবার মধ্যরাত পর্যন্ত পর্যটকরা সৈকত পাড়ে তরতাজা হরেকরকম সামুদ্রিক ‘ফিশ ফ্রাইয়ের’ স্বাদ নিতে ভুলছেন না।
পর্যটকের আগমনকে ঘিরে কুয়াকাটার বাণিজ্যিক ক্যামেরাম্যান, খুদে দোকানি, খাবার এবং আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিকরা স্বস্তিতে রয়েছেন। ক্যামেরাম্যান সোহেল জানান, শুক্রবার পর্যটক একটু বেশি থাকে। কিন্তু এই শুক্রবারে অনেক বেশি ট্যুরিস্ট এসেছে। খুদে দোকানি সোহরাফ হোসেন জানালেন, বেচাকেনাও কিছুটা বেড়েছে। আবাসিক হোটেল তাজওয়ার পরিচালক রণজিৎ মিত্র জানান, তাদের হোটেলের শতভাগ কক্ষ বুকিং রয়েছে। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, পর্যটকের উপস্থিতিতে ব্যবসায় যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। তারা পর্যটককে শতভাগ সেবা নিশ্চিতের চেষ্টা করছেন। তবে আগত বহু পর্যটক জানালেন, কুয়াকাটার অভ্যন্তরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরতে অটোবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে খাবার হোটেলে অন্যান্য স্থানের চেয়ে বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
পর্যটকের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি রয়েছে। রয়েছে মহিপুর থানা পুলিশের আইনি সহায়তা। কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়ার ইউএনও রবিউল ইসলাম জানান, পর্যটকের সকল সেবা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

×