ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পৌরবাসীর প্রাণখ্যাত খালটি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পৌরবাসীর প্রাণখ্যাত খালটি

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে কলাপাড়া পৌরশহরের মাঝখানের খালটি। পারিবারিকসহ সকল ধরনের বর্জ্য এই খালটিতে ফেলে ভরাটের ফলে খালটি এখন মৃতপ্রায়। এখন আর পানির প্রবাহ নেই। পরিণত হয়েছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে। পানির চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারপাশে। ময়লার দুর্গন্ধে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছেন খালপাড়ের বাসিন্দারা।

তিনদিকে বহমান পৌরবাসীর প্রখ্যাত খালটি রক্ষায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বহুবার মানববন্ধনসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পালন করে আসছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) উদ্যোগে খালটির চিঙ্গরিয়া অংশের প্রায় এক কিলোমিটার অংশের বাঁধ অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু ওই অংশের বাকিটুকু আর উদ্ধার হয়নি।

এছাড়া স্লুইসগেট থেকে রহমতপুর পর্যন্ত মূল অংশ এখন মৃতপ্রায়। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, খালটির দুই পাড় দখলে আগেই সংকুচিত হয়ে গেছে। এরই মধ্যে যতটুকু রয়েছে তাতে পারিবারিক বর্জ্য থেকে শুরু করে ব্যবহারের অপ্রয়োজনীয় খাতা-বালিশ পর্যন্ত খালটিতে ফেলা হয়েছে। পলিথিন আর প্লাস্টিক তো আছেই। দুই পাড়ের বাসিন্দারা খালটিতে শত শত টয়লেট স্থাপন করেছে। আবার কারও বাসার টয়লেটের আউটলাইন খালে দিয়ে রেখেছে। ফলে খালটি এখন পরিণত হয়েছে বর্জ্যের ভাগাড়ে।

আনুমানিক তিন কিলোমিটার দীর্ঘ খালটির এতিমখানার দ্বিতীয় পোলের পরে এখন আর জোয়ারের পানি প্রবহমান থাকে না। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হওয়ায় রহমতপুর পর্যন্ত অংশের সকল বর্জ্য ময়লা আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারদিকে। 

শহরের বাসিন্দা স্থপতি ইয়াকুব খান বলেন, ‘ খালটিকে সবাই দেখেশুনে উদার ও নগ্ন চিত্তে ব্যবহার করছে।’

আতিফ ইসলাম আরিফ বলেন, ‘এই খালটাই আমাদের শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছিল বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা। মশা চাষের উপযোগী। কিছুদিন এভাবে থাকলে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাবে।’  

খালটি খনন করা দরকার বলে জানান আরেক বাসিন্দা শাহজালাল মৃধা।

রুবেল হাওলাদার বলেন, দুর্গন্ধ আর মশা মাছির কারখানা এই খাল। দুর্ভাগ্য আমাদের দেখার কেউ নেই।’  দ্রুত খালটি খনন করে শরহরবাসীকে স্বস্তি দেওয়ার দাবি সচেতন মহলের।

ইতঃপূর্বে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়রা এবং পরিবেশকর্মীরা খালটি দখল-দূষণ বন্ধে ও ময়লা-আবর্জনা অপসারণের দাবি করে আসছে। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেননি।

কলাপাড়া পৌরসভার অর্ধলাখ মানুষের আকুতি খালটি রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

পরিবেশ কর্মী নজরুল ইসলাম জানান, সীমানা চিহ্নিত করে খালটি রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

কলাপাড়া পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানান, খালটির দখল-দূষণ বন্ধে এবং বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া খালটি সীমানা চিহ্নিতের কাজ শুরু হয়েছে। খনন শেষে খালের দুই পাড় বাধাই করে স্লোপে ব্লক স্থাপন করে ওয়াকিং জোন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

‘গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো প্রকল্পের’ আওতায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় নয় কোটি টাকা—যোগ করেন তিনি।

এসআরএস

×