আমরা শোষণ ও বৈষম্যহীন মানবিক দেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই

আমরা একটি মানবিক, শোষণহীন ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীরা আর বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না- এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা বলতে চাই, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা এখন যা পাচ্ছেন তার চাইতে আরও দুটি বেশি সুবিধা পাবেন। তা হলো সম্মান ও নিরাপত্তা।

বৃহস্পতিবার জয়পুরহাট সার্কিট হাউস ময়দান মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলা শাখা আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। 
সমাবেশে তিনি আরও বলেন, আমাদের দলের ১১ শীর্ষ নেতাকে এক এক করে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ও নির্যাতন করে তাদের ঘরছাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আর সেই পরিবেশ নেই। ২০০১-২০০৬ সময়কালে সংসদে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় ২  নেতা মন্ত্রী ছিলেন। তারা কখনো দুর্নীতি করেননি। তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির অভিযোগ দিতে পারেননি। আমরা নির্বাচিত হলে আপনাদের শাসক নই আমরা আপনাদের সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব  নেব। আমরা চৌকিদার হয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করব। 
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান  বলেন,  বিগত স্বৈরাচারী সরকার আমাদের দেশের মানুষের  মৌলিক অধিকার নষ্ট করে দিয়েছিল। ভোটের অধিকার খর্ব করে দিয়েছিল। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছিল। তারা ‘আমি আর ডামি’ এই দুইটাকে নিয়ে ভোট করেছেন, নিশিরাতের ভোট করেছেন। এখন সময় এসেছে তাদের বয়কট করার। তারা যদি আল্লাহকে ভয় করতেন তাহলে তারা জনগণকে বোকা মনে করতেন না।

আমরা নির্বাচিত হলে মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা কিছুই পাহাড়া দিতে হবে না। আমরা এমন একটা শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলন করব যাতে আল্লাহকে ভয় করতে শেখায়। তাহলেই সমাজ থেকে দুর্নীতি ও দুঃশাসন দূর হবে। তিনি আরও বলেন, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে গণহত্যা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি গণহত্যার বিচার করতে হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গণহত্যার বিচার করতে পারলে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।

যেনতেনভাবে ক্ষমতায় বসার জন্য তারা জীবন দেয়নি। দুঃশাসনমুক্ত দেশ গড়তে হলে, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে এই সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে। দেশে প্রতিটি খুন, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও ঘুষের বিচার হতে হবে। তা না হলে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে না। আমাদের ছাত্ররা রক্ত দিয়ে এই দেশকে মুক্ত করেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে আছি। আমরা তরুণদের হাতে দেশ তুলে দিতে চাই।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলা শাখার আমির ডা. ফজলুর রহমান সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও বগুড়া অঞ্চল পরিচালক মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলা সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়া, সহকারী সেক্রেটারি প্রচার ও মিডিয়া সেল সম্পাদক হাসিবুল আলম লিটন প্রমুখ।

সভা শেষে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সকালে মরহুম আব্বাস আলী মিলনায়তনে জেলার ৫ শতাধিক নারী জামায়াত কর্মীর এক সমাবেশেও তিনি বক্তব্য রাখেন।